ঘাতক তিমি
From Wikipedia, the free encyclopedia
ঘাতক তিমি বা অর্কা (বৈজ্ঞানিক নাম Orcinus orca অর্সিনুস অর্কা) একটি দাঁতালো তিমি, যা মহাসাগরীয় শুশুক পরিবারের সর্ববৃহৎ সদস্য। এটি অর্সিনাস গণের একমাত্র জীবিত প্রজাতি। এটিকে সহজেই বৈশিষ্ট্যসূচক সাদা-কালো বিন্যাসের দেহ দিয়ে চিনতে পারা যায়। এটি একটি বিশ্বব্যাপী বিরাজমান প্রজাতি; উত্তর মহাসাগর থেকে শুরু করে ক্রান্তীয় সাগরগুলি হয়ে দক্ষিণ মহাসাগর পর্যন্ত বিশ্বের সমস্ত মহাসাগর ও সাগরে বহুবিচিত্র সব সামুদ্রিক পরিবেশে এর বিচরণ আছে। প্রাপ্তবয়স্ক ঘাতক তিমি ২৩ থেকে ৩২ ফুট দীর্ঘ ও ওজনে ৬ টন হতে পারে এবং প্রকৃতিতে ৫০ থেকে ৮০ বছর বাঁচতে পারে।[6]
Orca Killer whale[1] সময়গত পরিসীমা: Pliocene to recent'"`UNIQ--ref-০০০০০০০২-QINU`"' | |
---|---|
Size compared to a ১.৮০-মিটার (৫ ফু ১১ ইঞ্চি) human | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | অ্যানিম্যালিয়া (Animalia) |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণি: | স্তন্যপায়ী (ম্যামেলিয়া) |
বর্গ: | আর্টিওড্যাকটিলা (Artiodactyla) |
অধিবর্গ: | Cetacea |
পরিবার: | Delphinidae |
গণ: | Orcinus (Linnaeus, 1758)[4] |
প্রজাতি: | O. orca |
দ্বিপদী নাম | |
Orcinus orca (Linnaeus, 1758)[5] | |
Orcinus orca range | |
প্রতিশব্দ | |
|
ঘাতক তিমিদের খাদ্যাভাস বিচিত্র, তবে বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায় নির্দিষ্ট ধরনের শিকার ধরতে দক্ষ হয়ে থাকে। কিছু কিছু ঘাতক তিমি কেবলমাত্র মাছ ধরে থাকে, আবার অন্যরা সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন সিলমাছ ও শুশুকের অন্যান্য প্রজাতি শিকার করে থাকে। এছাড়া তারা বালিন তিমির শাবক, এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক বালিন তিমিদেরও আক্রমণ করতে পারে। ঘাতক তিমিরা হল শীর্ষ খাদ্যশিকারী প্রাণী, কেননা তাদের কোনও প্রাকৃতিক শিকারী নেই। তারা উচ্চমাত্রায় সামাজিক প্রাণী। কিছু কিছু সম্প্রদায় খুবই স্থিতিশীল মাতৃবংশপরম্পরাভিত্তিক দল (পড) নিয়ে গঠিত, যা কিনা যেকোনও প্রাণী প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে স্থিতিশীল। তাদের পরিশীলিত শিকার পদ্ধতি ও বাচিক আচরণগুলি দলভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে এবং এই বৈশিষ্ট্য ও দক্ষতাগুলি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে হস্তান্তরিত হয় বলে এ ঘটনাটিকে প্রাণী সংস্কৃতির নজির হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাটি ঘাতক তিমিদের সংরক্ষণ অবস্থাকে উপাত্তগতভাবে অপ্রতুল শ্রেণীভুক্ত হিসেবে মূল্যায়ন করেছে, কেননা দুই বা ততোধিক ঘাতক তিমির ধরনের পৃথক প্রজাতি হবার সম্ভাবনা আছে। ঘাতক তিমির কিছু কিছু স্থানীয় সম্প্রদায়কে শিকারের ঘাটতি, আবাসস্থান লোপ, দূষণ (পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল দ্বারা), সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী উদ্যানের জন্য বন্দী হওয়া এবং বাণিজ্যিক মৎস্য আহরণকারীদের সাথে প্রতিযোগিতা, ইত্যাদি কারণে হুমকিগ্রস্ত প্রজাতি বা বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০০৫ সালের শেষভাবে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের জলরাশিগুলিতে সন্তরণশীল ঘাতক তিমিগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপন্ন স্তন্যপায়ী ও পক্ষী প্রজাতির তালিকাতে স্থান দেওয়া হয়।
বন্য ঘাতক তিমিদেরকে মানুষের জন্য হুমকি মনে করা হয় না, কেননা আজ পর্যন্ত প্রকৃতিতে মানুষের উপরে তাদের আক্রমণের কোনও প্রমাণ লিপিবদ্ধ করা হয়নি। তবে সামুদ্রিক প্রাণীদের চিড়িয়াখানাতে বন্দী ঘাতক তিমিগুলির দ্বারা প্রশিক্ষকদের হতাহতের ঘটনা বিরল নয়। বিশ্বের বিভিন্ন আদিবাসী সংস্কৃতির পৌরাণিক কাহিনীগুলিতে ঘাতক তিমিদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। সেগুলিতে এই প্রাণীগুলি বিভিন্ন মাত্রায় সুখ্যাত বা কুখ্যাত; কদাচিৎ তাদেরকে মানুষের আত্মা হিসেবে আবার অন্যত্র তাদেরকে নির্মম ঘাতক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।