Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
গিবসন মরুভূমি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার একটি বৃহৎ মরুভূমি যা এখনও অনেকটা আদিম অবস্থায়ই রয়েছে। এর আয়তন প্রায় ১,৫৫,০০০ বর্গ কি.মি. (৬০,০০০ বর্গ মাইল)। আয়তনের দিক থেকে এটি অস্ট্রেলিয়ার ৫ম বৃহত্তম মরুভূমি। গ্রেট ভিক্টোরিয়া, গ্রেট স্যান্ডি, তানামি ও সিম্পসন মরুভূমির পরই এর অবস্থান। গিবসন মরুভূমি একইসাথে অস্ট্রেলেশীয় জীবভৌগোলিক অঞ্চল এবং মরুভূমির বাস্তঅঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
গিবসন মরুভূমি | |
---|---|
বাস্তুসংস্থান | |
রাজত্ব | অস্ট্রেলেশিয়া |
জীবাঞ্চল | মরুভূমি ও জেরিক গুল্মভূমি |
সীমানা | মধ্য অঞ্চলের জেরিক স্ক্রাব, গ্রেট স্যান্ডি-তানামি মরুভূমি এবং গ্রেট ভিক্টোরিয়া মরুভূমি |
ভৌগোলিক | |
অঞ্চল | ১,৫৬,২৮৯ কিমি২ (৬০,৩৪৪ মা২) |
দেশ | অস্ট্রেলিয়া |
রাজ্যসমূহ | পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া |
সংরক্ষণ | |
সংরক্ষণ অবস্থা | তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল/অক্ষত |
সুরক্ষিত | ৯১,২৭৪ বর্গ কি.মি. (৫৮%)[1] |
গিবসন মরুভূমি মকরক্রান্তি বরাবর ডিসঅ্যাপয়েন্টমেন্ট হ্রদ ও ম্যাকডোনাল্ড হ্রদের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এর অবস্থান গ্রেট স্যান্ডি মরুভূমির দক্ষিণে, লিটল স্যান্ডি মরুভূমির পূর্বে এবং গ্রেট ভিক্টোরিয়া মরুভূমির উত্তরে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা কিছু জায়গায় ৫০০ মিটারের (১,৬০০ ফুট) সামান্য বেশি। আর্নেস্ট জাইল্সের[2] মতো প্রথম দিককার অভিযাত্রীরা লক্ষ্য করেছেন- এই মরুভূমির বেশিরভাগ অংশই নুড়িপাথর আচ্ছাদিত বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড। এখানে মরুভূমির সরু ঘাস জন্মে, লাল বালির বিস্তৃত সমতল ভূমি, উঁচু-নিচু ভূখণ্ড এবং বালিয়াড়ি দেখা যায়। নিচু পাথুরে শৈলশিরা, উঁচু ভূমির মাটিতে পর্যাপ্ত ল্যাটেরাইট- এসবই গিবসন মরুভূমির বৈশিষ্ট্য। ল্যাটেরাইটযুক্ত সমতলভূমির বেলেমাটি লৌহ সমৃদ্ধ। এখানে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মাটিতে পানির পরিমাণ খুবই কম, অধিকাংশ অঞ্চল কংকর ও বালিময়। এমন প্রতিকূল পরিবেশে কিছু মরুজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেখা মেলে। এখানকার উদ্ভিদ আকারে ছোট ও ঝোপযুক্ত হয়, ফলে বায়ু ও বালির ঝাঁপটা সহ্য করতে পারে। প্রাণীরা সাধারণত নিশাচর, এরা স্বল্প পানি গ্রহণ করে বেঁচে থাকে ও পানি সঞ্চয় করে রাখে। মরুভূমিটিতে কতিপয় বিচ্ছিন্ন লবণাক্ত পানির হ্রদ মধ্যাঞ্চলে যুক্ত হয়েছে, এছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিমে কয়েকটি ছোট হ্রদ নিষ্কাশন প্রণালির মধ্য দিয়ে একত্রিত হয়েছে।[3] এখানকার ভূ-গর্ভস্থ পানির উৎসের মধ্যে রয়েছে অফিসার অববাহিকা ও ক্যানিং অববাহিকার অংশবিশেষ।
গিবসন মরুভূমিতে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার (৭.৯ থেকে ৯.৮ ইঞ্চি), অন্যদিকে বার্ষিক বাষ্পায়নের হার প্রায় ৩,৬০০ মিলিমিটার (১৪০ ইঞ্চি) হয়ে থাকে। এখানকার জলবায়ু সাধারণত উষ্ণ; গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াসেরও (১০৪° ফারেনহাইট) উপরে উঠতে পারে। শীতকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৮° সেলসিয়াস (৬৪° ফারেনহাইট) হতে পারে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রাতের দিকে ৬° সেলসিয়াসে (৪৩° ফারেনহাইট) নেমে আসে।[4]
অস্ট্রেলিয়ান অভিযাত্রী আর্নেস্ট জাইল্সের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি অভিযানে ১৮৭৪ সালের ২৩ এপ্রিল এই মরুভূমিতে তার দলের একজন তরুণ সদস্য আলফ্রেড গিবসন নিখোঁজ হন। তিনি আর ফিরে আসেননি। ধারণা করা হয়, তিনি পথ হারিয়ে ফেলেন এবং এখানেই মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে আর্নেস্ট জাইল্স এই তরুণ অভিযাত্রী আলফ্রেড গিবসনের স্মরণে মরুভূমিটির নামকরণ করেন গিবসন মরুভূমি।[2]
গিবসন মরুভূমির অধিকাংশ স্থানে, বিশেষত পশ্চিম দিকের এলাকায় বসবাসরত মানুষের বেশিরভাগই আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ান। ১৯৮৪ সালের তীব্র খরার সময় মরুভূমির জলাশয়গুলো শুকিয়ে যায় এবং খাদ্যাভাব দেখা দেয়। এসময় মরুভূমির মধ্য-পূর্বাঞ্চলে (ওয়ারবার্টনের উত্তর-পূর্বে) বসবাসকারী পিন্টুপি গোত্রের কয়েক দল মানুষ, যারা এতদিন মরুভূমির ঐতিহ্যবাহী অর্ধ-যাযাবর জীবনধারায় অভ্যস্ত ছিল, প্রথমবারের মতো মূলধারার অস্ট্রেলিয়ান জনগোষ্ঠীর সংস্পর্শে আসে। ধারণা করা হয়, এরাই সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার আধুনিক সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন শেষ নৃগোষ্ঠী। গিবসনের পূর্বাঞ্চলে জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে ওয়ারবার্টন, মান্টামারু ও ওয়ারাকার্না। এসব এলাকার অনেক জনগোষ্ঠী ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত। মরুভূমিতে বসবাসরত আদিবাসী পরিবারগুলোর প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা উইলুরারা ক্রিয়েটিভ প্রোগ্রামে তাদের সংস্কৃতির সমৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য কাজ করেন।[5]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.