গন্ধগোকুল

স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

গন্ধগোকুল

গন্ধগোকুল (ইংরেজি: Asian palm civet; বৈজ্ঞানিক নাম: Paradoxurus hermaphroditus) এশীয় তাল খাটাশ, ভোন্দর, লেনজা, সাইরেল বা গাছ খাটাশ নামে পরিচিত। তালের রস বা তাড়ি পান করে বলে তাড়ি বা টডি বিড়াল নামেও পরিচিত। এছাড়া লংগর বা পোলাওপ্রাণী নামেও অনেক অঞ্চলে পরিচিত এই প্রাণীটি।

দ্রুত তথ্য এশীয় তাল খাটাশ, সংরক্ষণ অবস্থা ...
এশীয় তাল খাটাশ[]
Thumb
গাছে গন্ধগোকুল
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Mammalia
বর্গ: মাংশাশী
উপবর্গ: Feliformia
পরিবার: Viverridae
গণ: Paradoxurus
প্রজাতি: P. hermaphroditus
দ্বিপদী নাম
Paradoxurus hermaphroditus
(Pallas, 1777)
Thumb
Asian palm civet range: native in green, introduced in red
বন্ধ

গন্ধগোকুল বর্তমানে অরক্ষিত প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। পুরোনো গাছ, বন-জঙ্গল কমে যাওয়ায় দিন দিন এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।[] আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) বিবেচনায় পৃথিবীর বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় উঠে এসেছে এই প্রাণীটি। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রজাতির গন্ধগোকুলের বাস।[]

বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[]

আকার

Thumb
মাথার খুলি এবং দন্তোদগমের চিহ্ন

এরা মাঝারি আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী। নাকের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত ৯২-১১২ সেন্টিমিটার, এর মধ্যে লেজই ৪৪-৫৩ সেন্টিমিটার।[] লেজের দৈর্ঘ্য ৪৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আকার ৫৩ সেন্টিমিটার।[] ওজন ২.৪-৫.০ কেজি। স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে গন্ধগ্রন্থি থাকে। গন্ধগোকুলের গাট্টাগোট্টা দেহটি স্থূল ও রুক্ষ বাদামি-ধূসর বা ধূসর-কালো লোমে আবৃত।[]

স্বভাব

Thumb
কিশোরবয়স্ক এশিয়ান তাল খাটাশ বা গন্ধগোকুল বা লংগর
Thumb
ফিলিপাইনের গন্ধগোকুল বা লংগর

গন্ধগোকুল নিশাচর। খাটাশের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে এরাই মানুষের বেশি কাছাকাছি থাকে। দিনের বেলা বড় কোনো গাছের ভূমি সমান্তরাল ডালে লম্বা হয়ে শুয়ে থাকে, লেজটি ঝুলে থাকে নিচের দিকে। মূলত ফলখেকো হলেও কীটপতঙ্গ, শামুক, ডিম-বাচ্চা-পাখি, ছোট প্রাণী, তাল-খেজুরের রসও খায়। অন্য খাদ্যের অভাবে মুরগি-কবুতর ও ফল চুরি করে। এরা ইঁদুর ও ফল-ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের উপকার করে।[] গন্ধগোকুলের ধূসর রঙের এই প্রাণীটির অন্ধকারে অন্য প্রাণীর গায়ের গন্ধ শুঁকে চিনতে পারার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে। প্রায় পোলাও চালের মতো তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে থাকে। একসময় এর শরীরের গন্ধ উৎপাদনকারী গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহূত হতো। বর্তমানে কৃত্রিম বিকল্প সুগন্ধি তৈরি হয়।[]

প্রজননকাল

স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে গন্ধগ্রন্থির নিঃসরণের মাধ্যমে নিজেদের সীমানা নির্ধারণ করে। মূলত একাকী হলেও প্রজননের সময় স্ত্রী-পুরুষ একত্রে থাকে। বছরে সাধারণত দুবার প্রজনন করে। গর্ভধারণকাল দুই মাসের কিছু বেশি। পুরোনো গাছের খোঁড়ল ছানা প্রসবের উপযুক্ত স্থান। কিন্তু খোঁড়লের অভাবে গাছের ডালার ফাঁকে, পরিত্যক্ত ঘর বা ইটের ভাটা, ধানের গোলা, তাল-সুপারির আগায় ছানা তোলে। প্রতিবার ছানা হয় তিনটি। ছানারা চোখ খোলে ১০-১২ দিনে। মা-গন্ধগোকুল দেহের সঙ্গে লেজ মিলিয়ে একটি বৃত্তের সৃষ্টি করে। ছানারা কখনোই বৃত্তের বাইরে যায় না। প্রায় ছয় মাস বয়সে ছানারা সাবালক হয়।[]

আবাস

এশিয়ান গন্ধগোকুল ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয় উপত্যকা, সাবাহ, সারাওয়াক, ব্রুনেই দারুসসালাম, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, চীন, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, জাভা, কালিম্যানতান, বইয়ানসিবেরাত এলাকায় স্থানীয়। ইরিয়ান জয়া, লেজার সুন্দ্রা দ্বীপপুঞ্জ, মালুকু, সুলাওজি এবং জাপানে এ প্রাণীর প্রাচীন আবাসস্থল। পাপুয়া নিউগিনিতে এদের উপস্থিতি তেমন চোখে পড়ে না।[]

উপপ্রজাতি

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
Various Asian palm civet subspecies, as illustrated in Pocock's The Fauna of British India, including Ceylon and Burma - Mammalia Vol 1

Since Peter Simon Pallas's first description published in 1777, a significant number of subspecies have been described between 1820 and 1992. They are listed according to the year of description:[]

  • P. h. hermaphroditus (Pallas, 1777)
  • P. h. bondar (Desmarest, 1820)
  • P. h. musanga (Raffles, 1821)
  • P. h. javanica (Horsfield, 1824)
  • P. h. pallasii (Gray, 1832)
  • P. h. philippinensis (Jourdan, 1837)
  • P. h. setosus (Jacquinot and Pucheran, 1853)
  • P. h. nictitans (Taylor, 1891)
  • P. h. lignicolor (Miller, 1903)
  • P. h. minor (Bonhote, 1903)
  • P. h. canescens (Lyon, 1907)
  • P. h. milleri (Kloss, 1908)
  • P. h. kangeanus (Thomas, 1910)
  • P. h. sumbanus (Schwarz, 1910)
  • P. h. exitus (Schwarz, 1911)
  • P. h. cochinensis (Schwarz, 1911)
  • P. h. canus (Miller, 1913)
  • P. h. pallens (Miller, 1913)
  • P. h. parvus (Miller, 1913)
  • P. h. pugnax (Miller, 1913)
  • P. h. pulcher (Miller, 1913)
  • P. h. sacer (Miller, 1913)
  • P. h. senex (Miller, 1913)
  • P. h. simplex (Miller, 1913)
  • P. h. enganus (Lyon, 1916)
  • P. h. laotum (Gyldenstolpe, 1917)
  • P. h. balicus (Sody, 1933)
  • P. h. scindiae (Pocock, 1934)
  • P. h. vellerosus (Pocock, 1934)
  • P. h. dongfangensis (Corbet and Hill, 1992)

The taxonomic status of these subspecies has not yet been evaluated.[]

গ্যালারি

অথচ ইউজ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.