ক্লোরিন
রাসায়নিক মৌল যার প্রতীক Cl এবং পারমানবিক সংখ্যা ১৭ / From Wikipedia, the free encyclopedia
ক্লোরিন একটি রাসায়নিক মৌল যার প্রতীক Cl এবং পারমাণবিক সংখ্যা ১৭। পর্যায় সারণিতে এর অবস্থান হ্যালোজেন গ্রুপে ফ্লোরিন আর ব্রোমিনের মাঝে, বৈশিষ্ট্যেও ক্লোরিন এদের মাঝামাঝি। ক্লোরিন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় হলুদ-সবুজ বর্ণের গ্যাস রূপে থাকে। এটি একটি খুবই শক্তিশালী জারক পদার্থ। জগতের সকল পদার্থের মাঝে ক্লোরিনের সবচেয়ে বেশি ইলেক্ট্রন আসক্তি রয়েছে এছাড়াও এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ তড়িত ঋণাত্বকতা সম্পন্ন মৌল। তড়িৎ ঋণাত্মকতার সারিতে ক্লোরিনের আগে অবস্থান করছে পর্যায়ক্রমে অক্সিজেন এবং ফ্লোরিন।
এই নিবন্ধটি ইংরেজি থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
ক্লোরিনের সবচেয়ে পরিচিত পদার্থ হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড, যা আমরা খাবার লবণ হিসেবে চিনি, যা প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত। প্রায় ১৬৩০ শতাব্দীতে এক রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ক্লোরিন গ্যাস সর্বপ্রথম আবিস্কৃত হয়েছিল, তবে তখন তা গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু হিসেবে পরিচিতি পায়নি। Carl Wilhelm Scheele ১৭৭৪ সনে ক্লোরিন গ্যাসকে এক নতুন অণুর অক্সাইড হিসেবে বর্ণনা করেন। ১৮০৯ সনে রসায়নবিদগণ ক্লোরিন গ্যাসকে এক মৌলিক পদার্থ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। Sir Humphry Davy ১৮১০ সনে গ্রিক থেকে গ্যাসটির নাম প্রদান করেন "ক্লোরিন", যার অর্থ গাড় সবুজ৷ গ্যাসটির রঙ সবুজাভ হওয়ায় এরূপ নামকরণ করা হয়৷ উচ্চ সক্রিয় মৌল হওয়ায় প্রকৃতিতে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরিন আয়নিক ক্লোরাইড যৌগ রূপে পাওয়া যায়, যার একটি হলো খাদ্য লবণ। হ্যালোজেন হিসেবে ফ্লোরিনের পরে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্লোরিনই পাওয়া যায়। এমনকি প্রকৃতিতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া যৌগের মাঝে ক্লোরিনের অবস্থান ২১তম। সমুদ্রের পানিতে পাওয়া ক্লোরিনই মূলত মাটিতে জমা হয়।
বাণিজ্যিকভাবে ক্লোরিন মৌল ব্রাইন (সোডিয়াম ক্লোরাইডের গাঢ় জলীয় দ্রবণ) থেকে ইলেক্ট্রোলাইসিসের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। উচ্চ জারণ মান থাকার কারণে ক্লোরিন ব্লিচ এবং ডিসইনফেক্টেন্ট (এমন পদার্থ যা দেহের বাইরে ক্ষতিকর রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করে) তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ক্লোরিন বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যার দুই তৃতীয়াংশই হল জৈব রাসায়নিক পদার্থ, যেমন পলিভিনাইল ক্লোরাইড, এছাড়াও ক্লোরিন বিভিন্ন প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। একটি সাধারণ জীবাণুনাশক হিসেবে সরাসরি ক্লোরিন অথবা ক্লোরিন জাত যৌগ পানিকে পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে সুইমিংপুলে ব্যবহার করা হয়। তবে উচ্চ ঘনত্বের ক্লোরিনের সরাসরি ব্যবহার সকল জীবের জন্য খুবই বিপদজনক এবং এটি বিষাক্ত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রাসায়নিক যুদ্ধাস্ত্র (chemical warfare agent) হিসেবে সর্বপ্রথম বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহৃত হয়েছিল।
ক্লোরাইড আয়ন হিসেবে ক্লোরিন সকল জীবের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়ন ছাড়া অন্যান্য ধরণের ক্লোরিন যৌগগুলি জীববৈচিত্র্যের মাঝে প্রায় বিরল। কৃত্রিম উপায়ে যেসব জৈব ক্লোরিন তৈরি করা হয় তা নিস্ক্রিয় অথবা বিষাক্ত হয়ে থাকে। ক্লোরিন যুক্ত জৈব পদার্থ, যেমন ক্লোরো ফ্লোরো কার্বণ ওজন স্তর ক্ষয়ের একটি মূল কারণ। নিউট্রোফিলে ক্লোরাইডের জারণের মাধ্যমে আমাদের শরীরে ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ ক্লোরিন মৌল তৈরি হয়।