Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মাঝে কোরিয়া বিভাজন সংঘটিত হয়, ৩৫-বছর ধরে চলা জাপান সাম্রাজ্যের কোরিয়া শাসনের অবসান ঘটে ১৯৪৫ সালে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন দেশটির দুই অংশ অধিকরণ করে নেয়, নিজ নিজ অধিকৃত অঞ্চল শাসনে রাখতে ৩৮তম সমান্তরাল সীমানা নির্ধারণ করে।
স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়, যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যবর্তী আলোচনা কোরিয়াকে স্বাধীন ও সমন্বিত করতে ব্যর্থ হয়। ১৯৪৮ সালে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র অধিকৃত দক্ষিণ কোরিয়াতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অপরদিকে বিরোধী কমিউনিস্ট পার্টির সিংমান রি নির্বাচনে জিতবার পরও কিম ইল-সাং কে উত্তর কোরিয়ার দিকপাল হিসেবে নিয়োগ দেয় জোসেফ স্টালিন। এই নির্বাচন দক্ষিণ কোরিয়ায় কোরিয়ান প্রজাতন্ত্রের ভিত গড়তে সহায়তা করে, যা শীঘ্রই উত্তর কোরিয়ার গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রীর ভিত গড়ে। যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়াকে এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন উত্তর কোরিয়াকে সমর্থন করতে থাকে এবং প্রত্যেক অংশই কোরিয়ার সার্বভৌম ক্ষমতা দাবি করতে থাকে।
ফলাফল স্বরূপ কোরিয়ান যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত এবং তখন থেকে দুই কোরিয়াকে এখন পর্যন্ত কোরিয়ান অসামরিকীকৃত অঞ্চল (ডিএমজেড) দ্বারা আলাদা করে দেয়।
জাপানিজ শাসনামলের অধীনে (১৯১০-১৯৪৫)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ কোরিয়া অধিকরণ
সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তর কোরিয়া অধিকরণ
জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ এবং আলাদা আলাদা সরকার গঠন
মূল প্রবন্ধ: কোরীয় যুদ্ধ সহস্র বছর একীভূত থাকবার পরেও উভয় প্রশাসনের কাছে এই কোরিয়া বিভাজন বিতর্কিত ও অস্থায়ী ছিল। ১৯৪৮ সালে থেকে ২৫শে জুন, ১৯৫০ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষের সামরিক বাহিনী তাদের সীমান্তে প্রায়শই রক্তাক্ত সঙ্ঘর্ষে যুক্ত থাকত। ১৯৫০ সালে এই বিরোধ নাটকীয়ভাবে ছড়িয়ে পরে যখন উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী দক্ষিণ কোরিয়াকে আক্রমণ করে যা কোরীয় যুদ্ধ শুরুর কারণ। জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করে দক্ষিণ কোরিয়াকে সাহায্যের জন্য, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী পাঠিয়ে। যেহেতু দক্ষিণ কোরিয়া তাদের অধিকৃত, তাই গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া চেষ্টা করে সম্পূর্ণ দেশটিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে, শুরু করে শিল্প জাতীয়করণ, ভূমি সংস্কার এবং অধিবাসিগণের সংস্থা পুনর্নির্মাণ।
যখন জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের ফলে ৩৮তম সমান্তরালে সীমান্ত পুনরূদ্ধারের কল্পনা করা হচ্ছিল, তখন সিংমান রি দ্বিমত করেন যে উত্তর কোরিয়ার আক্রমণে সীমান্ত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। একইভাবে জাতিসংঘের সেনাপ্রধান, জেনারেল ডগলাস ম্যাকআর্থার কোরিয়াকে একত্রিত করার সঙ্কল্প প্রকাশ করেন এমন উত্তর কোরিয়ার বাহিনীকে সীমান্তের ওপারে বিতারিত করেন। যদিও মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর আক্রমণের আগেই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় ৯০ শতাংশ উত্তর কোরিয়ার দখলে চলে গিয়েছিল। যেহেতু উত্তর কোরিয়ান সেনাবাহিনীরা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বিতারিত হয়েছিল, দক্ষিণ কোরিয়ান সেনাবাহিনীরা ১লা অক্টোবর ৩৮তম সমান্তরাল অতিক্রম করে এবং এক সপ্তাহ পরে মার্কিন ও জাতিসংঘের অন্যান্য বাহিনী তাদের অনুসরণ করে। এটা ছিল গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার সতর্কতা যে যদি মার্কিন সেনাবাহিনী ৩৮তম সমান্তরাল অতিক্রম করে তবে উত্তর কোরিয়া দখল স্বরূপ, কোরিয়ান ন্যাশনাল পুলিশের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে কোরিয়া প্রজাতন্ত্র সরকারের নেতৃত্বে দেশটিকে একত্রীভূত করার চেষ্টা করবে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী যখন উত্তর কোরিয়ার দিকে সরে আসছিল তখন চীন পাল্টা আক্রমণ করে যা তাদের পুনরায় দক্ষিণ কোরিয়ায় ফেরত পাঠায়।
১৯৫১ সালে সম্মুখ সমর ৩৮তম সমান্তরালে স্থিতিশীল হয় এবং উভয়পক্ষ যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয়। যদিও রি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত কোরিয়া একত্রীভূত হয়ে তার নেতৃত্বাধীন হচ্ছে। কমিউনিস্টরা ৩৮তম সমান্তরালের উপর ভিত্তি করে একটি যুদ্ধবিরতি রেখা সমর্থন করে, কিন্তু জাতিসংঘ সমর্থন করে প্রত্যেক রাজ্যক্ষেত্রের রেখার উপর ভিত্তি করে, যা ছিল সমর্থনযোগ্য এবং তা জয়লাভ করে। যুদ্ধের তিন বছর পরে কোরিয়ান যুদ্ধবিরতি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। উভয় পক্ষ নিজ নিজ ভূখণ্ডের মাঝে চার কিলোমিটার প্রশস্ত নিরাপদ অঞ্চল তৈরী করতে একমত হয়, যা কোরিয়ান অসামরিকীকৃত অঞ্চল (ডিএমজেড) হিসেবে পরিচিত। ৩৮তম সমান্তরাল বরাবর এই নতুন সীমান্তরেখা প্রত্যেকের নিজ নিজ এলাকা অধিকারের মাধ্যমে যুদ্ধাবসান প্রতিফলিত করে। রি মেনে নিতে অসম্মতি জানায় এবং দেশটি একত্রীভূত করতে জোর অব্যাহত চলায়।
দেশ একত্রীভূত করণে উভয় পক্ষের সচেষ্ট প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও, যুদ্ধই কোরিয়া বিভক্তিকে চিরস্থায়ী করে এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে মৈত্রীবন্ধনের সৃষ্টি করে এবং যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ীভাবে দক্ষিণ কোরিয়াকে সৈন্য সরবরাহ করে।
যেহেতু কোরিয়ান সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, ১৯৫৪ সালে অনুষ্ঠিত জেনেভা সম্মেলনে কোরিয়ান ব্যাপারটি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। বিভিন্ন জাতির প্রচেষ্টার সত্ত্বেও, কোরিয়ার সমন্বিত হওয়ার ব্যাপারটি অঘোষিত রেখেই সম্মেলন শেষে করা হয়ে যায়। সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে নিউট্রাল নেশনস সুপারভাইজরি কমিশন (এনএনএসসি) নামে একটি জাতি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধান কমিশন গঠন করা হয়েছিল যেটার কাজ ছিল সাময়িক রণাবসান পর্যবেক্ষণ করা। ১৯৫৩ সাল থেকে সুইস এবং সুইডিস আর্মড ফোর্সেস সদস্যরা এনএনএসসি-এর সদস্য হিসেবে ডিএসজেড এর কাছে অবস্থান নেয়।
মূল প্রবন্ধ: কোরিয়ান সংঘর্ষ যুদ্ধে থেকেই কোরিয়া ডিএমজেড বরাবর বিভক্ত হয়ে আছে। উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার আলাদা আলাদা ভাবে পুরো দেশটির আইনসঙ্গত সরকার হবার দাবী করে আসছে এবং একটি সঙ্ঘাতময় অবস্থায় আছে। দেশটিকে পুনরায় একীভূত করতে বিভিন্ন বৈঠকের স্থায়ী সমাধানও ব্যর্থ হয়েছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.