কৃষি থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন
From Wikipedia, the free encyclopedia
কৃষি, বনায়ন এবং ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্র থেকে বিশ্বব্যাপী ১৩% থেকে ২১% গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়।[2] কৃষিকাজ সরাসরি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। সেইসাথে, বনভূমির মতো অকৃষি জমিকে কৃষিজমিতে রূপান্তরের মাধ্যমেও প্রভাব ফেলে।[1][3] কৃষিকাজ থেকে মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণের অর্ধেকেরও বেশি অংশ আসে নাইট্রাস অক্সাইড এবং মিথেন থেকে।[4] পশুপালন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণের একটি প্রধান উৎস।[5]
ভূমি ব্যবহার ও জীবাশ্ম জ্বালানির বড় ভোক্তা হওয়ার পাশাপাশি, কৃষিকাজ ধান চাষ এবং গবাদি পশু পালনের মতো কার্যাবলির মাধ্যমে সরাসরি এই গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণে অবদান রাখে।[6][7][8] বিগত ২৫০ বছরে গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধির তিনটি প্রধান কারণ হলো জীবাশ্ম জ্বালানি, ভূমি ব্যবহার ও কৃষিকাজ।[9] খামারের প্রাণীদের পরিপাকতন্ত্রকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: মনোগ্যাস্ট্রিক এবং রোমিন্যান্ট। গরুর মাংস এবং দুগ্ধজাত পণ্যের জন্য রোমিন্যান্ট গবাদি পশু গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণে শীর্ষস্থানীয়। শূকর এবং হাঁস-মুরগি জাতীয় মনোগ্যাস্ট্রিক প্রাণী পালন থেকে নির্গমণ তুলনামূলকভাবে কম হয়। এসব প্রাণীর খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরের সক্ষমতা বেশি এবং মিথেনও কম উৎপাদন করে। নাইট্রোজেন সারের উৎপাদন এবং ব্যবহারকালে যে পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় তা মানবসৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণের প্রায় ৫%।[10] নিঃসরণ কমানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো কম সার ব্যবহার করা এবং সারের ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি করা।[11] বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমণ এড়াতে ফসল কাটার পর মাটিতে থাকা শিকড় ও অবশিষ্টাংশের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা জরুরি।[12]
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণের প্রভাব কমানো এবং উৎপাদন আরও কমাতে কৃষিক্ষেত্রে অনেক কৌশল ব্যবহার করা যেতে পারে। এই পদ্ধতির মধ্যে আছে জলবায়ু-সম্মত কৃষিকাজ, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং আরও কার্যকরী পশুপালন ব্যবস্থাপনা। সারের কার্যকর ব্যবহার, সৌরশক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসে নির্ভরতা বাড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, গবাদি পশুর খাবার, পানি দেওয়ার পরিমাণ, সময় এবং স্থানে বৈচিত্র্য আনা কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। আর, প্রাণীজ খাবারের উৎপাদন ও ব্যবহার কমানোও এর অংশ।[13][14][15][16] কৃষিক্ষেত্র থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ কমাতে এবং অধিকতর টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বেশ কিছু নীতিমালা কার্যকর করা যেতে পারে।[17]:৮১৬–৮১৭