কিমোনো
জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক / From Wikipedia, the free encyclopedia
কিমোনো(着物, きもの) জাপানের ঐতিহ্যবাহী একটি পোশাক। কিমোনো শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল "কাঁধে পড়ার বস্তু"। " কি" এর উৎপত্তি কিরু(着る)[1] থেকে, একটি উভলিঙ্গ ক্রিয়া যা দ্বারা কাঁধে বা পুরো শরীরে পড়ার কাপড় বোঝায় এবং "মোনো"(物)[2] অর্থ "বস্তু"।
সময়ের সাথে, কিমোনো একটি টি-আকারের জড়ান নির্দিষ্ট আস্তিন দৈর্ঘ্যের, বৈচিত্র্যময় এবং নান্দনিক নির্মাণশৈলীর পোশাকে পরিণত হয়েছে। কিমোনো শব্দের বহুবচন কিমোনো, কারণ জাপানিরা বহুবচনভেদ করে না, যদিও বাংলায় বহুবচন অর্থে কিমোনোগুলো ব্যবহৃত হয়। কিমোনো প্রায়শই গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ছুটি এবং উৎসবে, এবং কোনো অনুষ্ঠান যেমন বিয়ে বা শ্রাদ্ধে পড়া হয়ে থাকে।
কিমোনো সাধারণত গোড়ালি-উচ্চতায় পড়া হয়ে থাকে, যদিও নারীদের কিমোনোর উচ্চতা বেশি হয়, যেহেতু তারা কোমরে ভাঁজ রেখে পড়ে। কিমোনোর কলার ভাঁজ করা এবং সর্বদা বাম কলার ডানের উপরে (যদি না পরিধানরত ব্যক্তি মৃত হন)[3] থাকে। কিমোনোর আস্তিন কব্জি পর্যন্ত থাকে এবং কোনো কোনো বৈচিত্রের ক্ষেত্রে আস্তিন ভূমি স্পর্শ করে।
কিমোনো ওবি নামক উত্তরীয় দ্বারা পিঠের পিছনে কোশিহিমো (কোমর বন্ধনি) নামক একগুচ্ছ বাঁধন দ্বারা গ্রন্থিবদ্ধ থাকে যেগুলো কিমোনোকে বন্ধ রাখে, যেহেতু আধুনিক ওবি কিমোনোকে জায়গামত ধরে রাখার জন্য অতিরিক্ত শক্ত। ওবি পিছনে মুসুবি নামক গিঁট দ্বারা বাঁধা থাকে এবং অনুষ্ঠান, ওবি আর বয়সভেদে প্রচুর রকমের মুসুবি রয়েছে। কিমোনো সাধারণত জোরি বা গেটা নামক ঐতিহ্যবাহী জুতা এবং তাবি নামক বিভক্ত পদাঙ্গুলির মোজার সাথে পড়া হয়।
বর্তমানে কিমোনো সাধারণত নারীদের দ্বারাই পরিহিত হয়, বিশেষত কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে। অবিবাহিত মেয়েরা ঐতিহ্যগত ভাবে বিশেষ অনুষ্ঠানে ফুরিসোদে ('ঝুলন্ত আস্তিন') কিমোনো পড়ে থাকে, যেগুলোর আস্তিন প্রায় ভূমিস্পর্শি হয়, যদিও তাদের নৈমিত্তিক কিমোনোগুলোও লম্বা আস্তিনের এবং সামনে গোলাকার প্রান্তের হয়ে থাকে। আধুনিক কালে নারীরা সাধারণত শুধুমাত্র ফুরিসোদে কিমোনো পড়ে বিশেষ অনুষ্ঠানে এবং ২০-২৫ বছরের মধ্যেই তা পড়া ছেড়ে দেয়, বিবাহিতা হোক কিংবা নয়। পুরুষেরা সাধারণত বিয়ে, চা অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ আর আনুষ্ঠানিক উপলক্ষ্যে পড়ে থাকে।
দৈনন্দিন জীবনে যারা প্রত্যহ কিমোনো পড়ে থাকে তারা মূলত বৃদ্ধ পুরুষ এবং মহিলা, গেইশা এবং সুমো কুস্তিগির যাদের গণউপস্থিতিতে ঐতিহ্যবাহী জাপানি পোশাক পড়া বাধ্যতামূলক।[4]