Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কামতা রাজ্য ত্রয়োদশ শতকে পাল রাজবংশের পতনের পর পুরানো কামরূপ রাজ্যর পশ্চিম অংশে গঠিত হয়।[1] কামতা রাজ্যের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে অসম বুরঞ্জীর প্রাচীন যুগ শেষ হয় এবং মধ্য যুগ আরম্ভ হয়। এই অঞ্চলের শেষ শাসক ছিলেন কামতেশ্বর নীলাম্বর সেন যাকে গৌড়ের শাসক আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ক্ষমতাচ্যুত করে। প্রশাসনিক গাঁথনির সৃষ্টি করলেও হোসেন শাহ এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি আর কোচ রাজবংশ এই অব্যবস্থার সুযোগ নেন।
কোচদের রাজ্যকে কোচ রাজ্য বলা হয়। পরে রাজ্যটি দুভাগ হয়ে পড়ে: কোচবিহার ও কোচ হাজো। পূর্বের রাজ্য কোচ হাজো ১৭শ শতকে আহোম রাজ্যের অন্তর্গত হয়। পশ্চিমের অংশ কোচবিহার কোচ রাজবংশের হাতে থাকে এবং পরে পশ্চিম বাংলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[2]
খেন রাজবংশ তাদের রাজধানী কামতাপুর বা গোসানীমারীর (বর্তমান কোচবিহার জেলায়) থেকে শাসন করত। শেষ রাজা নীলাম্বর সেন (১৪৮০-১৪৯৮) রাজ্য বাড়িয়ে বর্তমান পশ্চিম বঙ্গের কোচবিহার জেলা, অসমের অবিভক্ত কামরূপ ও দরং জেলা, এবং বাংলাদেশের উত্তর ময়মনসিংহ ও দিনাজপুর জেলার পূর্ব অংশ অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।[3]
গৌড় আরব থেকে আগত শাসক আল্লাউদ্দিন হুসেন শাহ (১৪৯৪-১৫১৯) ১৪৯৮ সালে শেষ খেন রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।[4] । হুসেন শাহ ২৪,০০০ পদাতিক, অশ্বারোহী সেনা ও যুদ্ধ-জাহাজ নিয়ে কামতা আক্রমণ করেছিলেন।[5] হুসেন শাহ নগরটি ধ্বংস করে হাজো পর্যন্ত অঞ্চল নিজের হস্তগত করেন এবং তার পুত্রকে সিংহাসনে বসান।
হুসেন শাহ আগের গোষ্ঠীপতিদেরকে অব্যাহতি দিয়ে অঞ্চলটিতে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি "কমরু, কামতার বিজেতা" বলে নিজের মোহর বানিয়েছিলেন। তিনি আহোম রাজ্যের পশ্চিম সীমা পর্যন্ত রাজ্য বিস্তার করেন। পরে বার ভূইঞাকে ধরে স্থানীয় দলপতিসমূহ ও আহোম রাজা চুহুন্মুঙর চেষ্টায় হুসেন শাহ এই অঞ্চলের সামরিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ হারান। স্থানীয় নেতাগণ এই অঞ্চল শাসন করতে শুরু করেন এবং কোচ রাজবংশের উত্থান হয়।
আফগান শাসনের প্রভাব পরেও থেকে যায়। হুসেন শাহের মোহর কোচ বংশের শাসনকালে ১৫১৮ সাল পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছিল। মক্কা থেকে গিয়াসুদ্দিন আউলিয়া নামের একজন সাধু হাজোতে আসেন। তাকে কবর দেয়ার স্থান "পোয়ামক্কা" বলে পরিচিত হয় এবং হিন্দু-মুসলমানের তীর্থস্থান হয়ে ওঠে।[6]
ষষ্ঠদশ শতকের গোড়ায় কোচ রাজবংশী বিশ্ব সিংহ (১৫১৫-১৫৪০) কামতায় কোচরাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। সেই শতকের শেষদিকে রাজ্যটির পূর্বদিকের কোচ হাজো শাসন করা রাজা নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করে। কোচ হাজো ও কোচ বিহার পৃথক হয়ে যায় এবং সেই দুটি রাজ্যের সীমা বর্তমানের প্রায় অসম ও পশ্চিম বঙ্গের সীমা হয়ে পড়ে।
১৬১৫ সালে মোগলরা কোচ হাজো অধিকার করে। অঞ্চলটি নিয়ে আহোম ও মোগলদের সংঘাতের সৃষ্টি হয়। শেষে এই অঞ্চল আহোমের হাতে যায়। পশ্চিম অংশের কোচ বিহার প্রথমে মোগলদের সঙ্গে এবং পরে ব্রিটিশদের সঙ্গে মিত্রতা করে। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের শেষ পর্যন্ত এখানে রাজকীয় শাসন চলেছিল।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.