কণ্ণুর জেলা
কেরলের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কেরলের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কণ্ণুর হলো ভারতের দক্ষিণে অবস্থিত উপকূলীয় কেরালার ১৪টি জেলার মধ্যে মালাবার উপকূলে অবস্থিত একটি জেলা৷ কণ্ণুর শহর হলো এই জেলার সদর এবং সদরের নামেই সমগ্র জেলাটি প্রতিষ্ঠিত৷ জায়গাটির পুরানো কন্ননূর নামটি ছিলো স্থানীয় মালয়ালী কণ্ণূর নামেরই ইঙ্গ-অপভ্রংশ৷
কণ্ণুর জেলা কণ্ণনূর জেলা | |
---|---|
জেলা | |
ডাকনাম: কেরালার কিরীট | |
কেরালায় কণ্ণুর জেলার মানচিত্র | |
স্থানাঙ্ক: ১১.৮৬৮৯° উত্তর ৭৫.৩৫৫৪৬° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | কেরালা |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৫৭ |
জেলাসদর | কণ্ণুর |
সরকার | |
• জেলা পুলিশ প্রসাশন | শ্রী জি. শিববিকাশ (আইপিএস) |
আয়তন | |
• মোট | ২,৯৬১ বর্গকিমি (১,১৪৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২৫,২৩,০০৩ |
• জনঘনত্ব | ৮৫০/বর্গকিমি (২,২০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | মালয়ালম, ইংরাজী |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | আইএন-কেএল-কেএনআর, আইএন-কেএল |
যানবাহন নিবন্ধন | কেএল-১৩, কেএল-৫৮, কেএল-৫৯, কেএল-৭৮ |
লিঙ্গানুপাত | ১০৯০ ♂/♀ |
সাক্ষরতার হার | ৯৫.১০ % |
ওয়েবসাইট | www |
কেরালার জেলাগুলির মধ্যে কণ্ণুর জেলা শতাংশ বিচারে ষষ্ঠ অধিক নগরোন্নীত জেলা যেখানে ৫০ শতাংশের অধিক লোক শহরাঞ্চলে বসবাস করেন৷ কণ্ণুরের নগরবাসীর সংখ্যা ১৬,৪০,৯৮৬ জন, যা কেরালার এর্নাকুলাম জেলার পরেই দ্বিতীয় বৃৃহত্তম৷[1][2]
কণ্ণুর জেলার উত্তর দিকে কেরালা রাজ্যের কাসারগড় জেলা, দক্ষিণে কালিকট জেলা, দক্ষিণ পশ্চিমে মাহে জেলা ও দক্ষিণ পূর্বে বয়নাড়ু জেলা অবস্থিত৷ আবার জেলাটির উত্তর পূর্বদিকে রয়েছে কর্ণাটক রাজ্যের কোড়গু জেলা৷ পূর্বদিকে জেলাটি পশ্চিমঘাট পর্বতমালা দ্বারা বেষ্ঠিত, যা কর্ণাটক রাজ্যের সাথে কেরালার সীমান্ত নির্দেশ করে৷ এর পশ্চিমে রয়েছে আরব সাগর৷ পৈতলমালা (১৩২৭ মিটার) হলো জেলাটির সর্বোচ্চ বিন্দু৷ জেলাটির দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত মাহে জেলাটি মূলত পুদুচেরি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের একটি জেলা৷ জেলাটি ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়৷
দ্বাদশ শতাব্দীর আশেপাশে কণ্ণুর ছিলো অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র৷ এখান থেকে পারস্য ও আরবে প্রচুর ব্যবসা হতো৷ ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এটি দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম উপকূলে ব্রিটিশদের সদর ছিলো৷ অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ ভারতে অবধি কণ্ণুর শহর ও তার ভগিনীনগরী তালসেরি একত্রে পশ্চিম উপকূলে মুম্বাই ও করাচির পর তৃতীয় বৃহত্তম শহর ছিলো৷ ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম পর্তুগীজ ভাইসরয় ডোম ফ্রাঁসিশকু ডি আলমাইদা কণ্ণুর কেল্লা (সেণ্ট অ্যাঞ্জেলো ফোর্ট) নির্মান করান৷ ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ওলন্দাজরা পর্তুগীজদের থেকে এই কেল্লাটি নিজ দখলে নেন৷ তারা কেল্লাটির নবীনকরণ করান ও হল্যাণ্ডিয়া, জীল্যাণ্ডিয়া, ফ্রাইসল্যাণ্ডিয়া প্রভৃৃতি নামের একাধিক বুরুজ নির্মান করেন, যা আজকের বিদ্যমান কেল্লাটির মূল আকর্ষণ৷ পরে এগুলি রেখে মূল পর্তুগীজ কেল্লাটিকে ধূলিস্যাৎ করে দেওয়া হয়৷ এই কেল্লাটির এবং এর পেছনের মাছধরার ফেরিঘাটের অঙ্কিত চিত্র আমস্টারডামের রিজক্স যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে৷ ওলন্দাজরা কেল্লাটিকে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে আরক্কালের রাজা আলি রাজাকে বেচে দেন৷ ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশরা এটি দখল করেন এবং এটিকে মালাবার উপকূলে নিজেদের সেনাঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করেন৷ সপ্তদশ শতাব্দীতে মালাবারের একমাত্র মুসলিম শাসন আরক্কালের রাজধানী ছিলো কণ্ণুর শহর৷[3] ব্রিটিশ শাসনকালে এটি মাদ্রাজ প্রদেশের উত্তর মালাবার জেলার অংশ ছিলো৷
জেলাটির পানূর, কুতুপরম্ব এবং তালসেরি তালুকের মাট্টনূর এলাকাগুলি বহুদিন যাবৎ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের মধ্যে রাজনৈতিক হিংস্রতার আঁতুড়ঘর বলে পরিগণিত হতো৷ ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে সাতজন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন৷ এই নরহত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে কেরালা উচ্চ আদালত সংঘর্ষ আক্রান্ত জায়গাগুলিতে স্থায়ীভাবে কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনীর নিয়োজনের সিদ্ধান্ত জানায়৷ [4]
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ৫,২৯,৬২৩ | — |
১৯১১ | ৫,৬৫,২৬১ | +০.৬৫% |
১৯২১ | ৫,৭৮,৬৮০ | +০.২৩% |
১৯৩১ | ৬,৬২,৭১৫ | +১.৩৭% |
১৯৪১ | ৭,৪৩,৩২২ | +১.১৫% |
১৯৫১ | ৯,০৪,৪৭০ | +১.৯৮% |
১৯৬১ | ১১,৭৭,৯৪৮ | +২.৬৮% |
১৯৭১ | ১৫,৫২,৮০৯ | +২.৮% |
১৯৮১ | ১৯,৩০,৭২৬ | +২.২% |
১৯৯১ | ২২,৫১,৭২৭ | +১.৫৫% |
২০০১ | ২৪,০৮,৯৫৬ | +০.৬৮% |
২০১১ | ২৫,২৩,০০৩ | +০.৪৬% |
উৎস:[5] |
২০১১ খ্রিস্টাব্দের ভারতের জনগণনা অনুসারে কণ্ণুর জেলার জনসংখ্যা ২,৫২৩,০০৩ জন,[7] যা জনসংখ্যার বিচারের ভারতের ৬৪০ টি জেলার মধ্যে জেলাটিকে ১৭০ ক্রমে স্থান দিয়েছে৷[7] জেলাটির জনঘনত্ব ৮৫২ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,২১০ জন/বর্গমাইল) জন৷[7] ২০০১ থেকে ২০১১ এর মধ্যে জেলাটিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিলো ৪.৮৪ শতাংশ৷[7] কণ্ণুর জেলায় প্রতি ১০০০ পুরুষে ১১৩৩ জন নারী রয়েছেন,[7] যা ভারতের যে কোনো জেলার থেকে বেশি৷ জেলাটির সাক্ষরতার হার ৯৫.১০ শতাংশ৷ [7]
২০০১ খ্রিস্টাব্দে জেলাটির জনসংখ্যা ছিলো ২,৪১২,৩৬৫ জন এবং এটি ঐবছর সবচেয়ে নগরায়িত জেলা ছিলো কিন্তু পরবর্তী ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনার পর জেলাটি এর্নাকুলাম, ত্রিশূর এবং কালিকট জেলার পর চতুর্থ স্থান দখল করেছে৷ [8] জেলাটির ৫০.৩৫ শতাংশ মানুষ তথা ১,২৪০৯৮৬ জন শহরবাসী, যা শহরবাসী সংখ্যার বিচারে এর্নাকুলামের পরেই৷[9]
২০০১ খ্রিস্টাব্দে এই জেলাতে ৪৫ টি শহরাঞ্চল ছিলো যা তখনকার সময়ে অন্যসব জেলা থেকে অধিক ছিলো৷ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী ত্রিশূর জেলাতে ১৩৫টি ও কণ্ণুর জেলাতে ৬৭টি শহরাঞ্চল রয়েছে৷ [10] কণ্ণুর জেলাতে সাতটি বিধিসম্মত শহর রয়েছে যথা: কণ্ণুর, কণ্ণুর সেনানিবাস, তালসেরি, পাইয়ানূর, তালিপরম্ব, কুটুপিরম্ব এবং মাট্টনূর৷ এছাড়াও অন্যান্য ৬০টি জনগণনা নগরী রয়েছে, সেগুলি হল: আঞ্জরকাণ্ডি, আলীকট উত্তর, আলিকট দক্ষিণ, তোট্টদ, চেলোর, চেরুকুন্ন, চেরুতালম, চিরক্কল, চোকলি, ধর্মড়ম, এলয়াবুর, এরানহোলি, ইরিভেরি, কাদাচিরা, কাদিরুর, কালিয়াসেরি, কুদালি এবং কানহিরোড়ু, কন্নড়িপরম্ব, কণ্ণপুরম, কোট্টায়ম-মালাবার, মইয়িল, মাবিলাই, মুণ্ডেরী, মুলপ্পিলানগড়, নারাথ, নয়া মাহে, পাদুবিল্লাই, পল্লীকুন্ন, পণ্যণ্ণুর, পানূর, পাপ্পিনিসেরি, বদ্রীয়াড়, পাত্যম, ইরিট্টি, পেরলসেরি, পেরিঙ্গাতূর, পিনরায়ি, বলপত্তনম, বারাম.[8]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.