Loading AI tools
রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মোহাম্মদ আবদুল গাফফার (১৯১০-১৯৬৬), যিনি আবদুল গাফফার নামেও পরিচিত, ছিলেন বার্মার আরাকানের (বর্তমানে রাখাইন রাজ্য, মিয়ানমার) একজন রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৪৭ সালে বুথিডং থেকে ব্রিটিশ বার্মার আইনসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে বার্মার স্বাধীনতার পর বার্মার রাষ্ট্রপতি সাও শো থাইক ১৯৪৯ সালে আরাকানের তদন্ত কমিশনের সাত সদস্যের একজন হিসাবে গাফফারকে নিযুক্ত করেন। গাফফার ১৯৫২ সালে আকিয়াব পশ্চিম নির্বাচনী এলাকা থেকে জাতীয়তা চেম্বারে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫৬ সালে মংডু থেকে নির্বাচিত হন। তিনি প্রধানমন্ত্রী ইউ নু সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এম. এ. গাফফার এমপি | |
---|---|
বুথিডং এলাকার বার্মার গণপরিষদের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৪৭ – ১৯৪৮ | |
গভর্নর | হুবার্ট রেন্স |
আকিয়াব এলাকার জাতীয়তা চেম্বারের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৫২ – ১৯৫৬ | |
রাষ্ট্রপতি | বা উ |
মংডু এলাকার জাতীয়তা চেম্বারের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৫৬ – ১৯৬২ | |
রাষ্ট্রপতি | বা উ উইন মং |
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় সচিব | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯১০ বুথিডং, আরাকান বিভাগ, বার্মা প্রদেশ, ব্রিটিশ রাজ (বর্তমানে মিয়ানমার) |
মৃত্যু | ১৯৬৬ |
রাজনৈতিক দল | জমিয়তে ওলামা |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | এন্টি-ফ্যাসিস্ট পিপলস ফ্রিডম লীগ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় |
গাফফার বার্মার সবচেয়ে বেশি শতাংশ ভারতীয় আরাকানের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন।[1] ১৯৪৯ সালে গাফফার আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন তদন্ত কমিশনের কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন যাতে আরাকানি ভারতীয়দের এই অঞ্চলের স্থানীয় ভারতীয় নাম রোহাং ও রোহান-এর উপর ভিত্তি করে "রোহিঙ্গা" হিসেবে বর্ণনা করা হয।[2][3]
গাফফার ১৯১০ সালে ব্রিটিশ ভারতের বার্মা প্রদেশের আরাকান বিভাগের বুথিডংয়ের রোয়ানিনোটাং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল উল্লাহ মিয়া। গাফফার বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির চট্টগ্রাম সিনিয়র মাদ্রাসায় যোগদান করেন, যেখান থেকে তিনি ১৯২৪ সালে নিজের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি ১৯৩০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি ও ১৯৩৩ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৩১ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত আকিয়াবে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআইএস) ও ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত বুথিডংয়ের একজন শহরাঞ্চল কর্মকর্তা (টিও) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৭ সালের বর্মী সাধারণ নির্বাচনের সময় গাফফার বুথিডং নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে বর্মী গণপরিষদে নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারীতে তিনি বার্মা ইউনিয়নের একজন বিধায়ক হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। বার্মার প্রথম রাষ্ট্রপতি ১৯৪৯ সালে আরাকানের তদন্ত কমিশনের সাত সদস্যের একজন হিসেবে গাফফারকে নিযুক্ত করেন। বর্মী সাধারণ নির্বাচনের সময় তিনি আকিয়াব পশ্চিমের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয়তা চেম্বার নামক বর্মী উচ্চকক্ষে নির্বাচিত হন। ১৯৫৬ সালের বর্মী সাধারণ নির্বাচনের সময় তিনি মংডু ও বুথিডংয়ের প্রতিনিধি হিসেবে চেম্বারে নির্বাচিত হন। বার্মার প্রথম প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানের জন্য গাফফারকে সংসদীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন।
১৯৪৮ সালের ২০ নভেম্বরে গাফফার বার্মা ইউনিয়ন সরকারের প্রধান সচিবের কাছে একটি আপিলের স্মারক পেশ করেন যেখানে রোহিঙ্গা নামে আরাকানি ভারতীয়দের বার্মার "সরকারি জাতি" (জাতিগত গোষ্ঠী) হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।[2] স্মারকলিপিটি ১৯৫১ সালের আগস্ট বার্মার একটি ইংরেজি সংবাদপত্র গার্ডিয়ান ডেইলিতে প্রকাশিত হয়।[4]
আমরা রোহিঙ্গারা আরাকানের একটা জাতি। আমরা গণ্য করি যে রোহিঙ্গা ও আরাকানিরা আরাকানের দুটি প্রধান জাতি। আমরা প্রায় ৯ লাখের একটি জাতি, যা একটি জাতির জনসংখ্যার জন্য যথেষ্ট; এবং বড় ব্যাপার হলো একটি জাতির সংজ্ঞা অনুযায়ী আমরা একটি জাতি, আমাদের নিজস্ব স্বাতন্ত্র্যসূচক সংস্কৃতি ও সভ্যতা, ভাষা ও সাহিত্য, শিল্প ও স্থাপত্য, নাম ও নামকরণ, মূল্যবোধ ও সুসমতা, আইন ও নৈতিক বিধি, প্রথা ও বর্ষপঞ্জি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, যোগ্যতা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা; সংক্ষেপে, জীবন ও জীবনের প্রতি আমাদের স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের সকল নিয়ম অনুসারে রোহিঙ্গারা আরাকানের একটি জাতি।[2]
গাফফার তার সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক স্বীকৃতির আহ্বান ও ১৯৫০-এর দশকে রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি সত্ত্বেও; ১৯৬২ সালের বর্মী অভ্যুত্থানের পর আরাকানে ভারতীয় সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের সম্মুখীন হয়। ১৯৮২ সালের বর্মী জাতীয়তা আইন রোহিঙ্গাদেরকে বার্মার "জাতীয় জাতি" হিসাবে স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হয়ে সম্প্রদায়টিকে রাষ্ট্রহীন করে তোলে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রীয় শিক্ষা, সরকারি চাকরি ও চলাফেরার স্বাধীনতা থেকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, শর্তগুলোকে বর্ণবৈষম্যের মতো বলে বর্ণনা করা হয়েছে।[5][6]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.