একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হ্যাট্রিকের তালিকা
উইকিমিডিয়ার তালিকা নিবন্ধ / From Wikipedia, the free encyclopedia
যখন একজন বোলার ধারাবাহিকভাবে তিনটি বল ছুড়ে তিনজন ভিন্ন ভিন্ন ব্যাটসম্যানকে আউট করার মাধ্যমে তিনটি উইকেট লাভ করেন, তখন ক্রিকেটের পরিভাষায় তা হ্যাট্রিক নামে পরিচিত। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় এটি একটি অন্যতম সম্পর্কযুক্ত বিষয় কিন্তু বিরল ঘটনা হিসেবে বিবেচ্য। ৫ জানুয়ারি, ১৯৭১ তারিখে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ১ম ওডিআই থেকে শুরু করে ডিসেম্বর, ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৪,২২২টি খেলায় মাত্র ৪৯বার এ ধরনের হ্যাট্রিকের ঘটনা ঘটেছে। প্রথম ওডিআই হ্যাট্রিকটি করেছেন - পাকিস্তানি বোলার জালালউদ্দিন। তিনি নিয়াজ স্টেডিয়ামে সেপ্টেম্বর, ১৯৮২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এ ঘটনাটি ঘটান। বাংলাদেশের ফাস্ট বোলার শাহাদাৎ হোসেন, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ এবং স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক ও তাইজুল ইসলাম - এ পাঁচজন বিরল কৃতিত্বের অন্যতম অংশীদার হন। এদের মধ্যে তাইজুল ইসলাম নিজের অভিষেক খেলাতেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন।[1] এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদা দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের অভিষেক খেলায় হ্যাট্রিক করেন।[2] পরবর্তীকালে শ্রীলঙ্কার ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এবং শ্রীলঙ্কার শিহান মাদুশঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক খেলায় হ্যাট্রিক করেন।
সাম্প্রতিককালের হ্যাট্রিকটি ভারতের কুলদীপ যাদব ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছেন।
৪৯টি হ্যাট্রিকের মধ্যে শ্রীলঙ্কার বোলাররাই দলগতভাবে ৯টি হ্যাট্রিক করে রেকর্ড গড়েন। একমাত্র বোলার হিসেবে তিনবার হ্যাট্রিক করেন শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা। এছাড়া দু'টি করে হ্যাট্রিক করেন - পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম ও সাকলাইন মুশতাক, শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভাস ও নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। হ্যাট্রিক লাভকারী বোলাররা প্রায় সবাই ফাস্ট বোলার হিসেবে থাকলেও ব্যতিক্রম হিসেবে মাত্র ছয়জন স্পিনার এ বিরল রেকর্ড অর্জনে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে সমর্থ হয়েছেন। তারা হলেন - পাকিস্তানের সাকলাইন মুশতাক, জিম্বাবুয়ের প্রসপার উতসেয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার জেপি ডুমিনি, শ্রীলঙ্কার ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা এবং অন্যজন দুইজন - বাংলাদেশের শীর্ষ তারকা বোলার আব্দুর রাজ্জাক ও তাইজুল ইসলাম।[3] শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভাস যে-কোন স্তরের ক্রিকেটে খেলা শুরুর প্রথম ৩ বলে ৩ উইকেট নিয়ে অবিশ্বাস্য নজির স্থাপন করেন। ২০০৩ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এ রেকর্ড গড়েন।
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর হিসেবে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত ১১বার হ্যাট্রিক হয়েছে। প্রথমবারের মতো ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে হ্যাট্রিক করেন ভারতের চেতন শর্মা। গ্রুপ-পর্বে নিউজিল্যান্ডের কেন রাদারফোর্ড, ইয়ান স্মিথ এবং ইয়ান চ্যাটফিল্ডকে ৪২ ওভারের শেষ তিন বলে আউট করে তিনি এ কীর্তি গড়েন। সর্বশেষটি করেছেন নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট অস্ট্রেলিয়া বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে। ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এবং যে-কোন ওডিআইয়ের ১ম ব্যক্তি হিসেবে পরপর ৪ বলে ৪ জন ব্যাটসম্যানকে আউট করে দূর্লভ কৃতিত্বের অধিকারী হন মালিঙ্গা।[4] লাসিথ মালিঙ্গাই একমাত্র বোলার যিনি দু’টি বিশ্বকাপে হ্যাট্রিক করেছেন।
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাবেক অল-রাউন্ডার ওয়াসিম আকরাম এবং পেসার মোহাম্মদ সামি - এ দু’জন একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং টেস্ট ক্রিকেটে হ্যাট্রিক করেছেন।[5] ১৯ বছর ৮১ দিন নিয়ে আকিব জাভেদ সর্বকনিষ্ঠ হ্যাট্রিকধারী বোলার। অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলার ব্রেট লি, শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা ও লাসিথ মালিঙ্গা একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং টি২০ আন্তর্জাতিকে হ্যাট্রিককারী বোলার হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছেন।