Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ওইয়া অথবা লা (গ্রীক: Οία, উচ্চারিত হয় [ˈi.a][2]) হচ্ছে একটি ছোট গ্রাম এবং গ্রীসের সাইক্লাডসের, থীরা (সান্তোরিনি) এবং থেরাসিয়া দ্বীপে অবস্থিত দক্ষিণ এজিয়েনের একটি সাবেক সম্প্রদায় । ২০১১ সালের স্থানীয় সরকারের সংস্কারের পর থেকে এটি সান্তোরিনি পৌরসভার অংশ ছিল, এর মধ্যে এটি একটি পৌর ইউনিট।[3][4] এটি সমগ্র থেরাসিয়া এবং সান্তোরিনি দ্বীপের উত্তরপশ্চিমতম অংশ জুড়ে অবস্থিত, যেটি সান্তোরিনি পৌর ইউনিট সঙ্গে ভাগ করে। প্রধান রাস্তার নাম রাখা হয়েছে নিকোলোও নোমিকু। ২০১১ আদমশুমারী অনুযায়ী ১,৫৪৫ জন বাসিন্দা বসবাস করে, এবং এটির আয়তন ১৯.৪৪৯ কিমি২।[1][5]
ওইয়া প্যানো মেরিয়া Οία | |
---|---|
আঞ্চলিক এককের মধ্যে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ৩৬°২৮′ উত্তর ২৫°২২′ পূর্ব | |
দেশ | গ্রিস |
প্রশাসনিক অঞ্চল | South Aegean |
আঞ্চলিক ইউনিট | থীরা |
পৌরসভা | সান্তোরিনি |
• পৌর ইউনিট | ১৯.৪ বর্গকিমি (৭.৫ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[1] | |
• পৌর ইউনিট | ১,৫৪৫ |
• পৌর ইউনিট ঘনত্ব | ৮০/বর্গকিমি (২১০/বর্গমাইল) |
সম্প্রদায় | |
• জনসংখ্যা | ১,২২৬ (২০১১) |
সময় অঞ্চল | ইইটি (ইউটিসি+২) |
• গ্রীষ্মকালীন (দিসস) | ইইএসটি (ইউটিসি+৩) |
যানবাহন নিবন্ধন | EM |
ওইয়া পূর্বে পরিচিত ছিল আপ্যানো মেরিয়া (Απάνω Μεριά or Επάνω Μεριά, "upper side") নামে, এখন এটি স্থানীয়ভাবে প্যানো মেরিয়া হিসাবে পরিচিত,[6] এবং এখানকার বাসিন্দারা একে আপানোমেরিতেস (Απανωμερίτες) নামে ডাকে। প্রাচীন গ্রিক ওইয়া ছিল প্রাচীন থেরা এর দুটি আশ্রয়স্থলগুলির মধ্যে এবং এটি দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ছিল, যেখানে কামারি অবস্থিত।
ওইয়া ১৯ শতকের শেষের দিকে এবং ২০ শতকের প্রথম দিকে সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছেছিল। এটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এর বণিকদের জাহাজের উপর ভিত্তি করে ছিল, যারা পূর্ব ভূমধ্যসাগরে বাণিজ্য করতো, বিশেষ করে আলেকজান্দ্রিয়া থেকে রাশিয়া পর্যন্ত। গ্রামের সর্বোচ্চ অংশে নির্মিত দ্বিতল বিশিষ্ট নাবিকদের বাড়িগুলো গ্রামের প্রাক্তন সমৃদ্ধির একটি স্মৃতিচিহ্ন। ১৯৫৬ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে শহরটির কিছু অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।[7]
ভেনিসীয় শাসন শুরুর পূর্বে বিভিন্ন ভ্রমণের প্রতিবেদনগুলিতে ওইয়া এর উপনিবেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যখন মার্কো সানুডো ১২০৭ সালে ডুসি অফ ন্যাকোস প্রতিষ্ঠা করেন এবং সান্টোরিনিতে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।[8] ডা কোরিগনা পরিবার এর অধীনে, আগিওস নিকোলাস ক্যাসেল (Καστέλι του Αγίου Νικολάου), এছাড়াও অাপনোমারিয়া (Απανωμερία) নামেও ডাকা হতো, ছিল পাঁচটি স্থানীয় দুর্গের একটি। এটির গৌলাস স্থানটি, এখন দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত শহরের প্রাচীনতম অংশ।[9]
১৫৩৭-এ, হাইরেদ্দীন বারবারোসা এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ জয় করেন এবং সুলতান দ্বিতীয় সেলিমের অধীনে রাখেন।[10] তবে, সান্তোরিনি ১৫৬৬ সাল পর্যন্ত ক্রিস্পো পরিবারের অধীনে ছিল, তারপর জোসেফ নাসি এর অধীনে এবং ১৫৭৯ সালে তার মৃত্যুর পর উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে।
১৬ শতক থেকে ১৯ শতক পর্যন্ত, মানচিত্রে এ্যাপানোমারিয়া' বসতি স্থাপন করা হয়েছিল। ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, জ্যান দে থেভিনট ক্যাসেলি সান নিকোলাস নামটি ব্যবহার করেন। উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে নামটি ওইয়া-এ পরিবর্তিত হয়।
১৯ শতকের শেষের দিকে এবং ২০ শতকের প্রথম দিকে, শহরটি ছিল একটি নাবিকদের শহর যা ভূমধ্যসাগর জুড়ে বাণিজ্যের ফলে ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে, বিশেষত রাশিয়া ও আলেকজান্দ্রিয়া এর মধ্যকার বাণিজ্যিক রুট হিসেবে। ১৮৯০ সালে ওইয়াতে প্রায় ২,৫০০ জন বাসিন্দা এবং প্রায় ১৩০ টি পালতোলা জাহাজ ছিল। আর্মেনি সাগরে একটি জাহাজ-ঘাটা ছিল। দূরবর্তী অঞ্চলে পরিমানে চমৎকার মদ উৎপাদিত হতো এবং অন্যান্য স্থানের মধ্যে ফ্রান্সেও রপ্তানি করা হতো। যাইহোক, পিরোয়াস-এ বাষ্পশক্তির আগমন এবং জাহাজের ঘনত্বের ফলে শহরটির সমুদ্রতান্ত্রিক বাণিজ্যের পতন ঘটে এবং বিশেষ করে পিরোয়াস ও লৌরিয়ামে ক্রমবর্ধমান অভিবাসনের কারণে কৃষি হ্রাস পায়। যুদ্ধ, অর্থনৈতিক মন্দা এবং মৎস্য সম্পদের অধিক আহরণের কারণে শহরের অর্থনীতি ২০ শতকের প্রথম দিকে পতিত হয়েছিল।
৯ জুলাই ১৯৫৬-এ, রিক্টার স্কেলে৭.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।[7][11] শক্তিশালী আফটারশক (পরিমাপ ৭.২) এর উপকেন্দ্র সান্তোরিনির উত্তর উপকূলে অবস্থিত ছিল।[11] ভূমিকম্পটি নতুন অভিবাসীদের মধ্যে হয়, এবং ১৯৭৭ সালে ওইয়াতে মাত্র ৩০৬ জন বাসিন্দা ছিল। ভূমিকম্পের পরে, সাইক্ল্যাডের একটি আকর্ষণীয় পর্যটন শহর হিসেবে গ্রামটিকে পুনঃসংষ্কার করা হয় এবং একটি "নিখুত ছবির" শহর হিসাবে পরিচিত হয় এবং গ্রীষ্মের মৌসুমে মানুষ এখানে ভিড় করে।[2][6]
ওইয়া সাইক্লিডের সান্তোরিনি দ্বীপের উত্তর পশ্চিম প্রান্তের একটি সুন্দর গ্রাম।[12] এটি ক্যালডারার উত্তর প্রান্তে প্রায় ২ কিলোমিটার (১.২ মা) বিস্তৃত যা সান্তোরিনি দ্বীপটি গঠন করেছে, এবং সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৭০ এবং ১০০ মিটার (২৩০ এবং ৩৩০ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত। একদম পূর্বে অবস্থিত পিনিকিয়া (Φοινικιά; ফিনিকিয়া), এবং উত্তরে প্রায় ৫০০ মিটার (৫৫০ গজ) হচ্ছে থোলস (Θόλος)। ছোট মাছ ধরার গ্রাম অরমোস আর্মেনী (Όρμος Αρμένης) ওইয়া এর দক্ষিণে নিচে অবস্থিত। পশ্চিমে থেরাসিয়া থেকে বন্দর গ্রাম অরোমস আম্মোদি (Όρμος Αμμουδιού; আরো উচ্চারিত হয় আমৌদি) পর্যন্ত ফেরি সংযোগ রয়েছে[12]। ওইয়া থেকে নিচে বন্দর পর্যন্ত ৩০০টি সিড়ি রয়েছে। আগিওস নিকোলোস ছোট দ্বীপটি দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত।[13]
এটি কাল্ডেরা এর খাড়া ঢালের উপর নির্মিত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের পার্শ্বে ক্যালডেব্রায় ঘর এবং রেস্টুরেন্টগুলি তৈরি করা হয়েছে। এখানে সরু হাঁটার রাস্তা রয়েছে এবং একটি সেন্ট্রাল স্কয়ার রয়েছে।[6] এই গ্রামের সূর্যালোক ঘণ্টা ফুরা শহরের তুলনায় অনেক বেশি। এখানের রাস্তাগুলো খুব সরু এবং তাই পর্যটন মৌসুমের সময় অতিজনাকীর্ণ হয়ে পড়ে।[2][6] শহরকে অলঙ্করণ করা পরিবেশের মধ্যে রয়েছে সাদা ঘরগুলো, নীল গম্বুজ বিশিষ্ট গীর্জা এবং সেগুলোর সৌন্দর্য, ঐতিহ্যবাহী সাইক্ল্যাডিক ঘর এবং গুহা ঘরগুলো যেগুলো খাঁড়া পাহাড়ের উপরে শিলা মুখে উত্কীর্ণ হয়েছে। এটি একটি অবস্থান সৃষ্টি করে যেখানে ক্যাল্ডারের উপরে সূর্যাস্তের চমৎকার দৃশ্যের সৃষ্টি করে।[2][14] দক্ষিণপশ্চিমে, আর্মেনী সাগরে, পায়ে হেঁটে বা খচ্চর দিয়ে শহর থেকে যাওয়া যায়, একসময় এটি গুরুত্বপূর্ণ নৌকা-তৈরির কেন্দ্র ছিল। ছোট মেরামতের কাজ এখন একটি ঘাটায় করা হয়। দ্বীপের চারপাশে ঘুরেবেড়ানোর জন্য ও থেরাসিয়া যাওয়ার নৌকাগুলো এখান থেকে ছাড়ে। শহরের পশ্চিম পাশের আমৌদি প্রোতাশ্রয়ে ফোর্ট লন্ডসা এর খাড়া সিঁড়ি দ্বারা পৌছানো যায়; সেখানে কিছু টাভেরনাস (ছোট গ্রিক রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফে) এবং একটি নুড়ি পাথরের সৈকত রয়েছে।[2][6]
গ্রামটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত, এটি প্রায় ১৫০ মিটার (৪৯০ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত,এবং "ইগেলস নেস্ট" নামে পরিচিত যেখানে পলিয়া ও নেয়া কামেনি আগ্নেয়গিরিগুলো এবং থেরাসিয়া দ্বীপও দেখা যায়। এটি দ্বীপটি এবং ফিরা থেকে উত্তরে ১১ কিলোমিটার (৬.৮ মা) দূরত্বে অবস্থিত।[13] সেন্ট্রাল স্কয়ারে শহরটির প্রধান রাস্তা, প্রধান হাঁটার পথ হচ্ছে কোবেলড, যা "নিকালোউ নামিকাউ" নামে পরিচিত, যা পাহাড়ের উপর ক্যালডেব্রায় বৃত্তাকারভাবে অবস্থিত। দ্বীপটি ফিরার কাছ থেকে পৌঁছেছে যা দ্বীপটির শেষ স্থলভাগ।[6][14] ক্যালডারা নৌকা ভ্রমণ ওইয়া বা ফিরা-এ পাওয়া যায়।[15]
ওইয়া, গ্রীস এর জলবায়ু সাধারণত নাতিশীতোষ্ণ এবং হালকা। শীতকালে আর্দ্র ঋতু এবং গ্রীষ্ম গরম এবং শুষ্ক। জুনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ °সে (১০৪ °ফা) এবং ডিসেম্বরে ন্যূনতম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ০ °সে (৩২ °ফা)। বাতাসের বেগ আগস্টে ৫৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা (৩৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা) এর মতো এবং অক্টোবর ও ফেব্রুয়ারিতে ৯৮ কিমি/ঘ (৬১ মা/ঘ)।[16]
ওইয়া, গ্রিস-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ১৪ (৫৭) |
১৪ (৫৮) |
১৬ (৬১) |
১৯ (৬৬) |
২২ (৭২) |
২৬ (৭৯) |
২৭ (৮১) |
২৮ (৮২) |
২৬ (৭৮) |
২২ (৭২) |
১৮ (৬৫) |
১৬ (৬০) |
২১ (৬৯) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ৯ (৪৯) |
৯ (৪৯) |
১১ (৫১) |
১৩ (৫৫) |
১৬ (৬১) |
২০ (৬৮) |
২৩ (৭৩) |
২৩ (৭৩) |
২১ (৬৯) |
১৮ (৬৪) |
১৪ (৫৭) |
১১ (৫২) |
১৬ (৬০) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ৭১ (২.৮) |
৪৩ (১.৭) |
৪১ (১.৬) |
১৫ (০.৬) |
১০ (০.৪) |
০ (০) |
০ (০) |
০ (০) |
৫১ (২) |
১০০ (৪) |
২০০ (৮) |
২৮০ (১১) |
৮১১ (৩২.১) |
উৎস: [17] |
১৮৪০ থেকে ১৯৫১ পর্যন্ত বাদে, ওইয়া ছিল একটি স্বাধীন কমিউনিটি, ডিমোস ওইয়াস (Δήμος Οίας) থেকে ১ অক্টোবর ১৮৩৪ (ΦΕΚ ৪/১৮৩৫)। ১৯৯৭-এ কাপোডিস্ট্রিয়াস পরিকল্পনা এর অধীনে, ওইয়া, কিনোটিটা লাস (Κοινότητα Οίας) গ্রামের গ্রামীণ সম্প্রদায় গঠন করার জন্য এটি থেরাসিয়ার সাথে মিলিত হয়েছিল। প্রশাসনিক সংষ্কারের জন্য ২০১০-এর কালিক্রাটিস পরিকল্পনা এর অধীনে যেটি ১ জানুয়ারি ২০১১-এ কার্যকর হয়েছিল, এটি নতুন তৈরি সান্তোরিনি পৌরসভার মধ্যে ছিল, এবং ডিমোস থিরাস (Δήμος Θήρας), ওইয়ার জেলা হিসেবে (Δημοτική Κοινότητα Οιας)।[3]
ওইয়ার সাদা রঙের ঘরগুলো বৈশিষ্ট্যমন্ডিত, এগুলো অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি কুলুঙ্গির মধ্যে নির্মিত হয় যেগুলো হচ্ছে গুহা ঘর এবং জাহাজের ক্রুদের দ্বারা ব্যবহৃত হতো, আগ্নেয়গিরির গর্তের প্রান্তের উপর, যেগুলোতে থাকত সংকীর্ণ গলি এবং গম্বুজের সঙ্গে নীল-ছাদযুক্ত গির্জা। ১৯ শতকের শেষের দিকে ধনী জাহাজ কাপ্তানরা এই নব্য-ধ্রুপদী ম্যানশনগুলো নির্মান করেছে। এই ঘরগুলো একে অন্যের থেকে দেখে তৈরি করেছে।[14]
১৯৭৬-এ এই শহরটি আরিস কনস্ট্যান্টিনিডিস-এর অধীনে গ্রিক ন্যাশনাল ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন এর ঐতিহ্যবাহী বসতিগুলির সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৫ বছর ধরে, প্রোগ্রামটি নির্বাচিত বাড়িগুলির জন্য নতুন ব্যবহার সংরক্ষণ, পুনরুদ্ধার এবং নতুন ব্যবহারের সন্ধান এবং ঐতিহ্যবাহী গ্রীক স্থাপত্যের স্থাপত্যিক কাঠামোর প্রতিনিধিত্ব করতো। অনেক ইপস্কাফা স্পিটিয়া (υπόσκαφα σπίτια), ক্যালডেরার প্রান্তে নাবিকদের ঘরগুলো, হয়ে ওঠে অতিথি ঘর, হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট।
ওইয়াতে তাদের কাজের জন্য, গ্রিক ন্যাশনাল ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন ১৯৭৯-এ ইউরো নোস্ট্রা পুরস্কার এবং ১৯৮৬-এ সোফিয়াতে আর্কিটেকচার বিয়েন্নালে পুরস্কার অর্জন করে।[18]
এলাকার ভূতত্ত্ব মানচিত্র এবং স্থল স্থায়িত্বের মূল্যায়নের জন্য ওওইয়া কমিউনিটি এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও থেসালোনিকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিকদের সঙ্গে কাজ করছে, এবং ভবিষ্যতে ভূমিকম্প থেকে ঝুঁকি কমানোর জন্য কমিউনিটিটির প্রধান এখানেে নির্মাণ কাজ সীমিত করেছেন।[19]
শহরটি তার সাদা এবং নীল গম্বুজ বিশিষ্ট ঘরগুলোর জন্য সুপরিচিত। ঘরগুলি সাদা চুনের পানিতে রঙ করা হয় যাতে বৃষ্টির পানিগুলো নিচে পড়ে যায় এবং এগুলো সংগ্রহ করা যায়। ঘরগুলো সাদা রং করার অন্য কারণ হল নান্দনিক উদ্দেশ্য। অন্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে, গ্রিসের অটোমান শাসনের সময় ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গ্রীকদের তাদের সাদা পতাকা উত্তোলন করতে দেওয়া হয়নি। অবাধ্যতার মধ্যে, ওইয়াতে তারা গম্বুজের পাশাপাশি পুরো বাড়িকে তারা সাদা রং করতো গ্রামকে কার্যকর সাদা দৃষ্টিকোণ প্রদান এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। পাহাড়ের চূড়ায় চিত্তাকর্ষক ঘরগুলো বায়ু ভরা ঝামাপাথর ব্যবস্থার সাথে ক্যালডেরা ঢালের কুলুঙ্গি খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে যা ঘরগুলোকে ইনসুলেশন সুবিধা প্রদান করে, এটি শীতকালে গরম এবং গ্রীষ্মে ঠান্ডা প্রদান করে।[6]
ওইয়ার চূড়ায় রয়েছে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গ যা ভেনেসীয়দের অধীনে আর্জিরি পরিবারের আবাসস্থল ছিল এবং এখান থেকে সম্পূর্ণ ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এটিকে ফোর্ট লন্ডসাও বলা হয়।[7] শহরের সবচেয়ে পরিচিত ভবনগুলির মধ্যে একটি হল একটি পুরানো উইন্ডমিল, যা পোস্টকার্ডগুলিতে প্রায়ই দেখা যায়। অনেকগুলো কিয়স্ক (দোকান) রয়েছে যেগুলো জাতিগত পণ্য, হস্তশিল্প, গহনা এবং স্যুভেনির পন্য বিক্রয় করে[14] এবং অনেক ছোট আর্ট গ্যালারী রয়েছে, এগুলো হল আর্ট গ্যালারি ওইয়া এবং দ্য আর্ট গ্যালারি। [7] শহরে অসংখ্য পুনর্স্থাপিত গীর্জা আছে, এর মধ্যে রয়েছে পানাগিয়া গির্জা; কিছু নাবিকদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিল।[14]
শহরের অন্যান্য অবকাঠামো ও সাংস্কৃতিক সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, একটি ব্যাংক, এটিএম ক্যাশ সেবা, ইন্টারনেট ক্যাফে, বাস স্টেশন, ডাকঘর, স্বাস্থ্য ক্লিনিক ও ফার্মেসী ছাড়াও ক্যাফে, বার, রেস্টুরেন্ট এবং উপকূলীয় পথে মদের দোকান। মেরিটাইম মিউজিয়ামের নিকটবর্তী বয়ন কারখানা অনেক লুমস এবং বিক্রয়যোগ্য সূক্ষ্ম বস্ত্র উৎপাদন করে। এছাড়াও শহরে ব্যনিজ্য হয় কৃষিজ পন্যের যেমন মধু, ওয়াইন, ক্যাপাররস এবং ফাভা মটরশুটি।[14] শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় আকর্ষণগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে সূর্যাস্তের দৃশ্য পরিদর্শন। এটি সূর্যাস্ত পরিদর্শনের পয়েন্ট থেকে ওইয়াতে প্রতি সন্ধ্যায় একটি বিশেষ ইভেন্ট। এই সময় শহরটি দর্শকদের ঘিরে ঘন হয়, যখন সাদা ঘরগুলি এবং ক্যালডেরা কয়েক সেকেন্ডের জন্য পড়ন্ত সূর্যের সমস্ত রং ধারণ করে।[6]
ওইয়ায় সাগরের কাপ্তানদের ঘরগুলো ১৮০০ শতক থেকে টিকে আছে এগুলোর অবস্থান ও স্থাপত্যের জন্য। দুটি প্রধান উদাহরণ একে অন্যের কাছাকাছি অবস্থিত। একটি প্যানোরমিক দৃশ্য সমৃদ্ধ স্থান ও সরাসরি ক্যালডেরার উপর অবস্থান শুধুমাত্র একজন কাপ্তান নির্বাচন করতে পারতেন। এটি হচ্ছে দ্বিতল বিশিষ্ট ভেনেসীয় রেনেসাঁ অনুপ্রাণিত ১৮৬৪ সালের ঘর। মূলত ১৮৬৪ সালে সিগারাস স্যারিস পরিবার কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল, এটি ২০০২ সালে একটি বেসরকারী বিলাসবহুল হোটেল "১৮৬৪ দ্য সী ক্যাপ্টেন হাউস অ্যান্ড স্পা" রূপে রূপান্তর করা হয়েছিল। মূল বৈশিষ্ট্যগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো এবং অতিথিদের নিজেদের কাপ্তানের মত মনে হয়। দ্বিতীয় উদাহরনটি প্রধান গ্রাম পথের উপর অবস্থিত এবং ১৯৮৬ সালে এটি পুন:সংস্কার করা হয়েছিল স্থপতি লাউনিস জাগিয়েলিডিস কর্তৃক রেস্টুরেন্ট "ওইয়া ১৮০০" এ রুপান্তরের মাধ্যমে। ওইয়ায় সাগরের কাপ্তানদের সব ঘরগুলির স্থাপত্য স্বাতন্ত্র্যসূচক। এগুলোর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে এগুলোর উচ্চ বাঁকানো সিলিং, বহির্ভাগে মার্বেলের সঙ্গে আগ্নেয় পাথর খোদাই, আমদানি করা কাঠের তক্তার মেঝে, গুহা ঘরের ধনুকাকৃতি ছাদের পরিবর্তে সমতল ছাদ এবং সবসময় সেরা অবস্থানে অবস্থিত।
ওইয়ার আরেকটি ১৯ শতকের বাড়ি, পাহাড়ের চূড়া থেকে একটি ব্লক দূরে , পুনরুদ্ধার করা হয়েছে এবং থীরান সামুদ্রিক ইতিহাসের পৌর জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এটি বিরল চিত্রশিল্প, ইংরেজি লেবেল, নাবিকদের হাড়, পুরানো সামুদ্রিক যন্ত্রপাতি যেমন মাস্টহেড, ড্রইং ও নিদর্শন, পুরাতন ও নতুন থিরান জাহাজ ও ঐতিহাসিক ফটোগ্রাফের মডেল এবং অনেক পত্র ও নথিপত্র রয়েছে।[2][6]
লুইস ক্যান্ডলিস'এর ২০০৭ এর উপন্যাস সিনস আই ডোন্ট হেভ ইউ এর স্থান ওইয়া ও লন্ডন-এ নির্ধারন করা হয়।[20]
ওইয়া ১৯৮২-এর চলচ্চিত্র সামার লাভারস এর গল্পের কেন্দ্র ছিল।[21] "মাইকেল" ও "ক্যাথি", এই চলচ্চিত্রের দুইটি চরিত্র, ওইয়ার একটি ভিলাতে বসবাস করতো।ভিলাটি ১৯৮৭-এ এক দম্পতি কর্তৃক ক্রয় করা হয় এবং "সামারস লাভারস" নামের একটি উপহারের দোকানো রুপান্তর করা হয়।[22] ২০০৪-এ, ওইয়া দ্য সিস্টারহুড অব দ্য ট্রাভেলিং প্যান্টস চলচ্চিত্রের কিছু দৃশ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল এবং আবার দ্য সিস্টারহুড অব দ্য ট্রাভেলিং প্যান্টস ২ চলচ্চিত্রেও।[23] লারা ক্রফ্ট টুম্ব রেইডার: দ্য ক্রেডেল অফ লাইফ চলচ্চিত্রের প্রথম দৃশ্যে ওইয়া উপস্থাপিত হয়েছিল, এতে অভিনয় করে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। জেট স্কির পেছনে ধাওয়া দেওযার দৃশ্যটি ধারণ ককরা হয়েছিল আমৌদির কাছাকাছি, যেটি ওইয়ার নিচে একটি পুরনো মাছ ধরার পোর্ট।[24][25] চলচ্চিত্রটি ২০০৯-এ "টিন চয়েজ অ্যাওয়ার্ড" এর জন্য মনোনয়ন পেয়েছিল।[26]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.