Loading AI tools
দৃশ্যমান রশ্মি দ্বারা ইলেক্ট্রন নির্গমন বাধ্য করা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আলোক তড়িৎ ক্রিয়া কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের একটি প্রক্রিয়া, যেখানে কোন বস্তুর ওপর রঞ্জন রশ্মি বা দৃশ্যমান আলো পড়লে তা থেকে শক্তি শোষন করে ইলেক্ট্রনের নির্গমনকে ব্যাখ্যা করা হয়।[1] নির্গত ইলেকট্রনকে বলা হয় আলোক-ইলেকট্রন । এর আবিষ্কারক হেনরিখ হার্টজের নামানুসারে এই ক্রিয়াকে বলা হয় হার্টজ ক্রিয়া[2][3], যদিও এই নামের ব্যবহার অনেক কম। আলোক তড়িৎ ক্রিয়া আলোর কোয়ান্টাম আচরণ বোঝার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ধাপ। আলোর এই ধর্ম থেকে তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা ধারণার সূত্রপাত ঘটেছে।[1]
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
একটি ধাতব পাতের উপর তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ আপতিত হলে তাতে ফোটনগুলো শোষিত হয় এবং ইলেকট্রন নির্গত হয় যা তড়িত প্রবাহ সৃষ্টি করে। অবশ্য আপতিত বিকিরণের কম্পাঙ্ক অবশ্য সূচন কম্পাঙ্কের সমান বা বেশি হতে হবে। বিভিন্ন পদার্থের জন্য সূচনা কম্পাঙ্কের মান ভিন্ন ভিন্ন। বিকিরণের কম্পাঙ্ক সূচনা কম্পাঙ্কের চেয়ে কম হলে কোন ইলেকট্রন নির্গত হয়না কারণ সেক্ষেত্রে ইলেকট্রনগুলো তাদের স্থির তাড়িতিক বাধা অতিক্রম করার মত শক্তি অর্জন করতে পারেনা। পদার্থের কেলাসিত তলের শক্তি তথা এর কার্য অপেক্ষকের কারণেই এই স্থির বৈদ্যুতিক শক্তির সৃষ্টি হয়। আইনস্টাইনের আলোক তড়িৎ সমীকরণের কল্যাণে ১৯০৫ সালেই বিশ্বাস করা হতো আপতিত বিকিরণের কম্পাঙ্ক বৃদ্ধি পেলে নির্গত আলোক ইলেকট্রনের শক্তিও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ১৯১৫ সালের আগে শক্তির এ ধরনের বৃদ্ধির পক্ষে কোন পরীক্ষণমূলক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ বছর বিজ্ঞানী রবার্ট অ্যান্ড্রুজ মিলিকান পরীক্ষা করে দেখেন যে আপতিত বিকিরণের কম্পাঙ্ক বৃদ্ধির সাথে সাথে নির্গত ইলেকট্রনের শক্তি রৈখিকভাবে বৃদ্ধি পায়। বোঝা যায় আইনস্টাইনের ধারণাই সঠিক ছিল।
একটি পরীক্ষার মাধ্যমে আলোক তড়িৎ ক্রিয়া প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়। এ পরীক্ষার বায়ুশূন্য একটি কোয়ার্টজ নলের মধ্যে দস্তার তৈরি দুটি পাত যুক্ত করা হয়। একটি পাতে ক্ষার ধাতু বা ক্ষার ধাতুবিশিষ্ট পদার্থের প্রলেপ থাকে। ধরা যাক লিথিয়াম ডাই অক্সাইডের প্রলেপ রয়েছে। অন্য পাতটি প্রলেপবিহীন অবস্থায় থাকে। ক্ষারকীয় প্রলেপযুক্ত পাতটিকে একটি তড়িৎ কোষ তথা ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হয় আর অন্য পাতটিকে একটি গ্যালভানোমিটারের মাধ্যমে ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হয়। এবার প্রলেপযুক্ত পাতের উপর আলোক আপতিত হতে দিলে সেখানকার ধাতু থেকে ইলেকট্রন নির্গত হবে। ইলেকট্রন নির্গত হয়ে অপর পাতের দিকে যাবে যেহেতু তা ধনাত্মক। ফলে বদ্ধ বর্তনীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হবে যা গ্যালভানোমিটারের কাঁটার বিক্ষেপ থেকে বোঝা যাবে। তড়িৎ প্রবাহের মাত্রা আপতিত আলোকের প্রাবল্যের উপর নির্ভর করে। আলোকের প্রাবল্য বৃদ্ধি পেলে তড়িঃ প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে আর প্রাবল্য কমলে তড়িৎ প্রবাহও কমবে।
এই প্রাথমিক পরীক্ষাটি শেষে প্রলেপযুক্ত পাতটিকে ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্তের সাথে এবং প্রলেপবিহীন পাতকে ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করা হল। এবার প্রলেপযুক্ত পাতে আলোক রশ্মি আপতিত হলে সেখান থেকে ইলেকট্রন নির্গত হবে, কিন্তু এ প্রান্তের আধান ধনাত্মক হওয়ায় নির্গত ইলেকট্রন পুনরায় এই পাত দ্বারাই আকৃষ্ট হবে। ফলে তড়িৎ প্রবাহ হ্রাস পাবে। প্রলেপযুক্ত পাতের একটি নির্দিষ্ট বিভবের জন্য তড়িৎ প্রবাহমাত্রার মান হবে শূন্য। প্রলেপযুক্ত পাতে বিভবের যে মানের জন্য বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহমাত্রা শূন্য হয়ে যায় তাকে নিবৃত্তি বিভব (stopping potential) বলা হয়। এই নিবৃত্তি বিভব আলোকের প্রাবল্যের উপর নির্ভর না করলেও তার কম্পাঙ্ক বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। আবার পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে আপতিত আলোর কম্পাঙ্কর একটি নির্দিষ্ট মানের কম হলে তা ধাতব তল থেকে ইলেকট্রন নিঃসরণ করাতে সক্ষম হয়না। আলোক রশ্মির কম্পাঙ্কের এই নির্দিষ্ট মানকে সূচন কম্পাঙ্ক (threshold frequency) বলে। বিভিন্ন পদার্থের জন্য সূচন কম্পাঙ্কের মান ভিন্ন ভিন্ন হয়।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন তার আলোক তড়িৎ সমীকরণের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার একটি ব্যাখ্যা দাড় করিয়েছিলেন ১৯০৫ সালে। ব্যাখ্যাটা এরকম। ধাতব পাতের উপর আলোক রশ্মি আপতিত হলে মূলত ইলেকট্রন আলোক শক্তি তথা ফোটন দ্বারা আঘাতগ্রস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে ইলেকট্রন ফোটনের শক্তি সম্পূর্ণভাবে শোষণ করে নেয়। এই শোষিত শক্তি ব্যবহার করে ইলেকট্রন পদার্থের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়। মুক্ত হওয়ার পর ফোটনের শক্তির যে পরিমাণ অবশিষ্ট থাকে সে পরিমাণ গতিশক্তিতে ইলেকট্রন ছড়িয়ে পরে। তাহলে ইলেকট্রন নিজে মুক্ত হতে ব্যায়িত শক্তি এবং ইলেকট্রনের গতিশক্তি যোগ করলে তা আঘাতকারী ফোটনের শক্তির সমান হয়। এভাবে শক্তির নিত্যতা সূত্র রক্ষিত হয়। উল্লেখ্য একটি ফোটন কেবল একটি ইলেকট্রনকেই মুক্ত করতে পারে কারণ একটি ফোটনের শক্তি কেবল একটি ইলেকট্রন দ্বারাই শোষিত হতে পারে। নিঃসরিত ইলেকট্রনকে সাধারণত আলোক ইলেকট্রন নামে আখ্যায়িত করা হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.