Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আলেকজান্ডার আইভানোভিচ ওপারিন (১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৪ - ২১ এপ্রিল ১৯৮০) ছিলেন একজন সোভিয়েত প্রাণরসায়নবিদ। জীবনের উৎপত্তি বিষয়ে প্রদত্ত তত্ত্বের জন্য তিনি খ্যাত। তিনি উদ্ভিদে পদার্থ প্রক্রিয়াকরণের প্রাণরসায়ন অধ্যয়ন করেন। তিনি উদ্ভিদকোষে উৎসেচকের বিক্রিয়াও অধ্যয়ন করেন। ওপারিন দেখান, জৈব অনুঘটনের ভিত্তিতে খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে শিল্প প্রাণরসায়নের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন। [2]
আলেকজান্ডার ওপারিন | |
---|---|
জন্ম | [1] | ২ মার্চ ১৮৯৪
মৃত্যু | এপ্রিল ২১, ১৯৮০ ৮৬)[1] | (বয়স
জাতীয়তা | রুশ |
নাগরিকত্ব | সোভিয়েত ইউনিয়ন |
মাতৃশিক্ষায়তন | মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | জীবনের উৎপত্তি |
পুরস্কার | হিরো অব সোশ্যালিস্ট লেবার (১৯৬৯) লেনিন পুরস্কার (১৯৭৪) কলিঙ্গ পুরস্কার (১৯৭৬) লোমোনোসোভ স্বর্ণ পদক (১৯৭৯) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | প্রাণরসায়ন |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় সোভিয়েত বিজ্ঞান একাডেমি |
১৮৯৪ সালে উগলিচ শহরে ওপারিন জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৭ সালে তিনি মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক হন। ১৯২৭ সালে তিনি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণরসায়নের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তার প্রথম দিকের গবেষণাপত্রগুলোতে উদ্ভিদের উৎসেচক এবং বিপাকে তাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। ১৯২৪ সালে ওপারিন বলেন, পৃথিবীর "প্রিমোর্ডিয়াল সুপ"-এ কার্বন দ্বারা গঠিত কণাগুলোর ক্রমাগত রাসায়নিক বিবর্তনের মাধ্যমে পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তি হয়। ১৯৩৫ সালে ওপারিন ও শিক্ষাবিদ আলেক্সি বাখ সোভিয়েত বিজ্ঞান একাডেমিতে প্রাণরসায়ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। [2] ১৯৩৯ সালে ওপারিন একাডেমির সহযোগী সদস্য ও ১৯৪৬ সালে পূর্ণ সদস্য পদে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৪০ ও ১৯৫০ এর দশকে ওপারিন ট্রফিম লিশেঙ্কো ও ওলগা লেপেশিনস্কায়া প্রদত্ত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব সমর্থন করেন, যার মূল বিষয়বস্তু ছিল- "অকোষীয় বস্তু হতে কোষের উৎপত্তি ঘটে।" আলেকজান্ডার ওপারিন কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রমের একজন পূর্ণ সমর্থক ছিলেন, যার ফলে কর্মজীবনে তিনি দ্রুত উন্নতি লাভ করেন। ১৯৭০ সালে তিমি আন্তর্জাতিক জীবনের উৎপত্তি অধ্যয়ন সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালের ২১ এপ্রিল তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। মস্কো শহরের নোভিদেভিচি কবরস্থানে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
১৯৬৯ সালে ওপারিন "হিরো অব সোশ্যালিস্ট লেবার" বা সমাজতান্ত্রিক কর্মীদের নায়ক সম্মাননা লাভ করেন। "প্রাণরসায়নে অনবদ্য অবদানের" স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালে তিনি লেনিন পুরস্কার ও ১৯৭৯ সালে লোমসোমোভ স্বর্ণপদক লাভ করেন। এছাড়াও তিনি পাঁচবার অর্ডার অব লেনিন পুরস্কার লাভ করেন।
যদিও প্রথমে ওপারিন হারম্যান ফন হেমহোল্টজ ও উইলিয়াম থমসন কেলভিনের প্যানস্পার্মিয়া তত্ত্ব (অর্থাৎ সমগ্র মহাবিশ্বজুড়ে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে -এই তত্ত্ব) পর্যালোচনা করে তার প্রারম্ভিক বৈজ্ঞানিক জীবন অতিবাহিত করেন, প্রকৃতপক্ষে জীবনের উৎপত্তি নিয়েই তার সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল। ১৯২২ সালের দিকে ওপারিন এ সংক্রান্ত তত্ত্ব আলোচনা করেন।
প্রথমত, তিনি বলেন- জীবন্ত বস্তু ও নির্জীব বস্তুর মধ্যে মৌলিকত্বের কোনো তারতম্য নেই। পদার্থের বিবর্তনের ফলেই জীবনের জটিল বৈশিষ্ট্যগুলোর উদ্ভব ঘটেছে।
দ্বিতীয়ত, বৃহস্পতি গ্রহে মিথেন গ্যাসের আবিষ্কারের ঘটনার উপর ভিত্তি করে ওপারিন বলেন, সূচনালগ্নে পৃথিবীতে একটি শক্তিশালী হ্রাসমূলক পরিমণ্ডল বিরাজ করছিল। এর মধ্যে মিথেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন ও জলীয়বাষ্প অবস্থান করছিল, যেগুলো থেকে প্রাণের উৎপত্তি হয়।
তৃতীয়ত, শুরুতে জৈব বস্তুসমূহের সরল দ্রবণ-ই বিদ্যমান ছিল। অণু গঠনকারী পরমাণুর প্রকৃতি ও গঠনবিন্যাসের উপর এই দ্রবণগুলোর কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রিত হত। কিন্তু সময়ের সাথে অণুগুলোর জটিলতা বৃদ্ধি পায় এবং একটি নতুন কলয়ডাল-রাসায়নিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
চতুর্থত, যে প্রক্রিয়ায় কলয়ডাল-রাসায়নিক শৃৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটি জীবনের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায়ও সহায়তা করে। ওপারিনের মতে, প্রাকৃতিক নির্বাচন, প্রতিযোগিতা , কোষের বৃদ্ধি, যোগ্যতমের টিকে থাকা , অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম বর্তমানে প্রতিটি জীবেরই বৈশিষ্ট্য পরিগণিত হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.