Loading AI tools
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আবদুল হাই শিকদার (জন্মঃ ১৯৫৭ সাল) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক এবং সাংবাদিক।[1] সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রায় সকল অঙ্গণে তার রয়েছে সরব পদচারণা। তবে কবি হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত। মানবতা, স্বাধীনতা, জাতীয়তাবাদী চেতনার ধারক এই কবির মুখে সবসময় ধ্বনিত হয়েছে প্রেম, প্রকৃতি, বিশ্বমানবতা, শোষণমুক্ত সমাজ ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের কথা। এজন্য ১৯৯৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে কবি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলেও মানবমুক্তির স্বপ্ন, মুক্তচিন্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তিনি আছেন আপোষহীন। তার লেখনীতে বাংলাদেশের জাতিসত্তা ও বিশ্বমানবতার কথা প্রকাশ পাওয়ায় কবি আবদুল হাই শিকদারকে 'জাতিসত্ত্বার কবি'ও বলা হয়ে থাকে।[2] জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য অনুসন্ধানেও গণমাধ্যমে তিনি পালন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত তার শিকড় সন্ধানী ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান "কথামালা" তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এই নিবন্ধে একাধিক সমস্যা রয়েছে। অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির মান উন্নয়ন করুন অথবা আলাপ পাতায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
|
আবদুল হাই শিকদার Abdul Hye Sikder | |
---|---|
জন্ম | গোপালপুর, ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম | ১ জানুয়ারি ১৯৫৭
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
যুগ | একুশ শতক |
কবি আবদুল হাই শিকদার ১৯৫৭ সালের ০১ জানুয়ারিতে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদীর তীরে দক্ষিণ ছাট গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[3] তার পিতা ওয়াজেদ আলী এবং মা হালিমা খাতুন। তার পিতা ছিলেন একজন কৃষিবিদ। তার পিতা-মাতা দুজনই ছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর আসাম জীবনের ছাত্র।[1]
আবদুল হাই শিকদার প্রথম জীবনের লেখাপড়া শেষ করেন গ্রামের স্কুল, ভুরুঙ্গামারী হাই স্কুল, রংপুরের কারমাইকেল কলেজ-এ। তারপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে ১৯৭৯ সালে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেন।[3] তারপর দীর্ঘ বিরতির পর শান্ত মরিয়ম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৬ সালে বাংলা সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রী অর্জন করেন।
কবি আবদুল হাই শিকদার সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি সরকারি ও সাংগঠনিক কার্যক্রমেও যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গুরত্বপূর্ণ কর্মকান্ডের সাথে তিনি যুক্ত । তিনি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের আজীবন সদস্য, উপদেষ্টা, সহ-সভাপতি, সভাপতি ও সদস্য সচিব হিসেবে যুক্ত আছেন। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি, শত নাগরিক জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ, জাতীয় নজরুল সমাজ, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ইত্যাদি সংগঠনের অন্যতম সংগঠক। তিনি বাংলা একাডেমীর একজন ফেলো; । তিনি নজরুল ইনস্টিটিউট এর নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।[3] দৈনিক আমার দেশ-এর সিনিয়র সহকারী সম্পাদক ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (UODA) এর সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নাগরিক সমাজের জাতীয় সংগঠন "শত নাগরিক" জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।এছাড়াও তিনি বর্তমান বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় (BIU)-এ অধ্যাপনা করছেন।
কবি আবদুল হাই শিকদার পড়াশোনা সম্পন্ন করার পরপরই পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা বেছে নেন। তিনি ছাত্র অবস্থাতেই ১৯৭৭ সালে 'শাব্দিক সাহিত্যপত্র' নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে যুক্ত ছিলেন। সূদীর্ঘ ৪৪ বছরের সাংবাদিকতার পরিক্রমায় প্রতিবেদক, সহকারী সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সবই যুক্ত হয়েছে তার নামের সাথে। সাপ্তাহিক সচিত্র স্বদেশ দিয়ে ১৯৮১ সালে তার পেশাগত সাংবাদিকতার জীবন শুরু। পর্যায়ক্রমে মাসিক এখন (৮৬-৮৭), দৈনিক মিল্লাত (১৯৮৭-১৯৯৪), সাপ্তাহিক বিচিত্রা (১৯৯৪-১৯৯৭), দৈনিক ইনকিলাব (১৯৯৭-২০০৪), পত্রিকার সাথে যুক্ত হন। ২০০৪-২০০৫ তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ফিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।[3] ২০০৭ সাল থেকে তিনি দৈনিক আমার দেশ- এর সিনিয়র সহকারী সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ২ টার্মে টানা চার বছর (২০১৩-১০১৬) সফলতার সাথে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, শিশু সাহিত্য, গবেষণা, সম্পাদনা ইত্যাদি সাহিত্যের সব শাখাতেই আবদুল হাই শিকদার রেখেছেন তার অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর। এছাড়াও তিনি নজরুল বিষয়ক গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন, কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনের সাথেও তিনি যুক্ত। এ যাবৎ তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা প্রায় ১২০টি।[4] নিম্নে তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের তালিকা দেওয়া হলঃ[3][5]
আবদুল হাই শিকদার বেশ কিছু তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে নজরুল সংক্রান্ত ৩টি তথ্যচিত্র প্রযোজনা ও পরিবেশনা করে নজরুল ইন্সটিটিউট।
আবদুল হাই শিকদার একজন ভালো আলোকচিত্রীও। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদ ও পলাশী কেন্দ্রিক আলোকচিত্রসমূহ নিয়ে ৩টি প্রদর্শনী হয় ঢাকায় এবং সুধী মহল দ্বারা প্রশংসিত হয়। আর কোন পলাশী নয়, একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ১৯৯৭ (উদ্বোধন করেন তৎকালনি বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া)। আর কোন পলাশী নয়, একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী- ১৯৯৫ আর কোন পলাশী নয়, একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী-১৯৯৪ (পলাশী, মুর্শিদাবাদ এবং নবাব সিরাজদৌলার উপর বাংলাদেশে এই ধরনের প্রদর্শণী প্রথম)।
বাংলাদেশ টেলিভিশনঃ ১৯৯২-১৯৯৬, ২০০৩-২০০৬ শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য ম্যাগাজিন অণুষ্ঠান কথামালার উপস্থাপক, পরিকল্পনাকারী ও গ্রন্থনাকারী। এই অনুষ্ঠান জাতীয় সংস্কৃতির বিকাশে ও শিকড় সন্ধানে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। মুসলিম বাংলার প্রথম কবি শাহ মোহাম্মদ সগীর, মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিম, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কথাসাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেন, ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, মহাকবি কায়কোবাদ, কবি সতেন্দ্রনাথ দত্ত, কবি মোহিতলাল মজুমদার, বাংলা সনের প্রতিষ্ঠাতা আমীর ফতেহউল্লাহ খান সিরাজী, কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার, শেখ ফজলল করিম, আবুল মনসুর আহমদ, নবাব সিরাজদ্দৌলা,কবি হেয়াত মামুদ, মহাকবি হাফিজ, শেখ সাদী, ফারাক্কা বাঁধ, কাগমারী সাস্কৃতিক সম্মেলন, ফরায়েজি আন্দোলন এবং জাতীয় কবির জীবনের অনেক অনুদঘাটিত দিক নিয়ে এ অনুষ্ঠানে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রচার করা হয়।
কবি আবদুল হাই শিকদার তার বর্ণাঢ্য কর্ম ও সাহিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।[3]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.