আঙুলের ছাপ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আঙুলের ছাপ হল আঙুলের ছাপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য। যা কোন কঠিন পদার্থ আঙুলের মাধ্যমে স্পর্শ করলে সৃষ্ট হয়। মানুষের ত্বকের 'eccrine glands' থেকে নিঃসরিত ঘাম কোন কঠিন পদার্থ, যেমনঃ কাচ, পালিশ করা পাথর ইত্যাদির উপর আঙুলের ছাপ তৈরী করে। এর বৈজ্ঞানিক নাম dermatoglyphics।

ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
প্রাচীন এবং মধ্যযুগ
প্রাচীন মাটির ট্যাবলেট, সীলমোহর এবং মৃৎপাত্রে, মিশরীয় সমাধিগুলির দেওয়ালে এবং মিনোয়ান, গ্রীক এবং চীনা মৃৎপাত্র আঙুলের ছাপ পাওয়া গেছে।[১] প্রাচীন চীনে কর্মকর্তারা তাদের আঙুলের ছাপ দিয়ে সরকারী নথি প্রমাণীকরণ করতেন। প্রায় ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, ব্যাবিলনে লিখিত চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করা হত। [২]
ব্যাবিলনীয় রাজা হাম্মুরাবির সময়(রাজত্বকাল ১৭৯২-১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) আইন কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হওয়া লোকদের আঙুলের ছাপ নিতেন। [৩] চীনের কিন রাজবংশের সময়, রেকর্ডে দেখা গেছে যে কর্মকর্তারা অপরাধের দৃশ্য থেকে প্রমাণ হিসাবে হাতের ছাপ এবং পায়ের ছাপ এবং আঙুলের ছাপ নিয়েছিলেন।[৪] ৬৫০ সালে, চীনা ঐতিহাসিক কিয়া কুং-ইয়েন মন্তব্য করেন যে আঙ্গুলের ছাপ প্রমাণীকরণের একটি উপায় হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।চীনে সিল্ক এবং কাগজের আবির্ভাবের সাথে,আইনি চুক্তির নথিতে পক্ষগুলি তাদের হাতের ছাপ নিতেন।
৮৫১ খ্রিস্টাব্দের কিছুকাল আগে, চীনের একজন আরব বণিক, আবু জায়েদ হাসান, চীনা বণিকদের ঋণের প্রমাণীকরণের জন্য আঙুলের ছাপ ব্যবহার করতে দেখেছিলেন।[৫] ইরানি চিকিৎসক রশিদ-আল-দিন হামাদানি (১২৪৭-১৩১৮) তার জামি আল-তাওয়ারিখ (ইউনিভার্সাল হিস্ট্রি) গ্রন্থে তাদের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে চিহ্নিত করার চীনা অভ্যাসের কথা উল্লেখ করেছেন[৬]
১৬ এবং ১৮ শতক
১৬ শতকের শেষের দিক থেকে, ইউরোপীয় শিক্ষাবিদরা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আঙুলের ছাপ অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেন। ১৬৮৬ সালে, বোলোগনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানটমি বিভাগের অধ্যাপক মার্সেলো মালপিঘি পৃষ্ঠের উপর রেখে যাওয়া আঙ্গুলের ছাপগুলিতে শিলা, সর্পিল এবং লুপ সনাক্ত করেছিলেন। ১৭৮৮ সালে জার্মান অ্যানাটমিস্ট জোহান ক্রিস্টোফ আন্দ্রেয়াস মায়ার প্রথম ইউরোপীয় যিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে আঙ্গুলের ছাপ প্রতিটি ব্যক্তির জন্য অনন্য।[৭] ১৮৮০ সাল থেকে গবেষণা শুরু করে ১৮৯২ সালে ইংল্যান্ডে স্যার হেমচন্দ্র বসু এবং কাজি আজিজুল হক আবিষ্কার করেন যে পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যক্তি পাওয়া যাবে না যার আঙ্গুলে ছাপ অন্য কোনো ব্যক্তির সাথে হুবহু মিলে যাবে। ব্রিটিশ ভারতে অপরাধ তদন্তের জন্য 19 শতকের শেষদিকে হেমচন্দ্র বসু, কাজী আজিজুল হক এবং স্যার এডওয়ার্ড হেনরি দ্বারা বিকশিত হেনরি শ্রেণিবিন্যাস ব্যবস্থা হল একটি দীর্ঘস্থায়ী পদ্ধতি যার মাধ্যমে আঙ্গুলের ছাপ এক থেকে একাধিক অনুসন্ধানের জন্য শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য অনুসারে সাজানো হয়। ব্রিটেনের ‘দ্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সোসাইটি’, ‘দ্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সোসাইটি আজিজুল হক অ্যান্ড হেমচন্দ্র বোস প্রাইজ’ চালু করেছে।
ব্যবহার

'ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার' নামক যন্ত্রের মাধ্যমে আঙুলের ছাপকে ডিজিটাল ডাটায় রুপান্তর করা যায়। একেকজনের একেক রকম আঙ্গুলের ছাপ হওয়ায় এর ব্যবহার অনেক। যেমনঃ
ব্যক্তির স্বাক্ষর
- জাতীয় পরিচয় পত্রে
- ভিসা আবেদনের জন্য[৮]
- মোবাইল বা কম্পিউটারের ব্যক্তি শনাক্ত করন নিরাপত্তা!
- মোবাইল সংযোগ পেতে[৯]
ফরেনসিক
আপরাধী সনাক্তকরন করতে আঙুলের ছাপ অন্যতম মাধ্যম।
উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ
বর্তমানে অনেক স্কুলে ও অফিসে ছাত্র ও অফিসে কর্মরতদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হয়।
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.