অ্যাঙ্গোলা
দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার দেশ / From Wikipedia, the free encyclopedia
অ্যাঙ্গোলা (পর্তুগিজ: Angola, কঙ্গো: Ngola) সরকারি হিসেব মতে অ্যাঙ্গোলা প্রজাতন্ত্র (পর্তুগিজ: República de Angola, কঙ্গো: Repubilika ya Ngola) আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের পশ্চিম তীরে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। মোট আয়তন এবং জনসংখ্যার বিচারে (দুক্ষেত্রেই ব্রাজিলের ঠিক পরেই) এটি দ্বিতীয় সর্বোবৃহত্তম লিউসোফোন (পর্তুগীজ ভাষাভাষী) দেশ এবং আফ্রিকার সপ্তম সর্ববৃহৎ দেশ। এর দক্ষিণ সীমান্তে নামিবিয়া, উত্তরে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, পূর্বে জাম্বিয়া এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। অ্যাঙ্গোলার একটি ছিটমহল প্রদেশ রয়েছে, ক্যাবিন্ডা প্রদেশ, যা প্রজাতন্ত্রী কঙ্গো ও গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোকে ঘিরে রেখেছে। লুয়ান্ডা হচ্ছে অ্যাঙ্গোলার রাজধানী এবং সবচেয়ে জনবহুল শহর।
অ্যাঙ্গোলা প্রজাতন্ত্র República de Angola রিপুব্লিকা দে আঁগলা | |
---|---|
রাজধানী | লুয়ান্ডা |
বৃহত্তম নগরী | রাজধানী |
সরকারি ভাষা | পর্তুগিজ |
স্বীকৃত আঞ্চলিক ভাষা | কঙ্গো, চোকুয়ে, দক্ষিণ ম্বুন্ডু, ম্বুন্ডু |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | অ্যাঙ্গোলীয়, অ্যাঙ্গোলান |
সরকার | প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্রপতি |
• রাষ্ট্রপতি | জস্ এডোয়াদো ডোস সান্তোস্ |
• প্রধানমন্ত্রী | পালোও কাসসোমা |
স্বাধীন পর্তুগাল থেকে | |
• তারিখ | নভেম্বর ১১ ১৯৭৫ |
আয়তন | |
• মোট | ১২,৪৬,৭০০ কিমি২ (৪,৮১,৪০০ মা২) (২২তম) |
• পানি (%) | নগণ্য |
জনসংখ্যা | |
• ২০১৪ আদমশুমারি | ২৫,৭৮৯,০২৪ [1] |
• ঘনত্ব | ২০.৬৯/কিমি২ (৫৩.৬/বর্গমাইল) (১৯৯তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০১৭ আনুমানিক |
• মোট | $১৯৩.৯৩৫ বিলিয়ন[2] (৬৪তম) |
• মাথাপিছু | $৬,৮৮১[2] (১০৭তম) |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০১৭ আনুমানিক |
• মোট | $১২২.৩৬৫ বিলিয়ন[2] (৬১তম) |
• মাথাপিছু | $৪,৩৪২[2] (৯১তম) |
জিনি (২০০৯) | ৪২.৭[3] মাধ্যম |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৫) | ০.৫৩৩[4] নিম্ন · ১৫০তম |
মুদ্রা | কুয়াঞ্জা (AOA) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+১ (পূর্ব আফ্রিকা সময় অঞ্চল) |
ইউটিসি+১ (মান্য নয়) | |
কলিং কোড | ২৪৪ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | AO |
ইন্টারনেট টিএলডি | (.ao) |
প্যালিওলিথিক যুগ থেকেই অ্যাঙ্গোলায় বসবাস করছে মানুষ। পর্তুগীজ উপনিবেশন থেকেই জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে এর উদ্ভব যা ষোড়শ শতকে প্রাথমিকভাবে উপকূলীয় বসতি ও স্থান বাণিজ্যের মাধ্যমে শুরু হয়েছিলো। উনিশ শতকে ইউরোপীয়ান দখলদাররা অন্তর্ভাগে নিজেদের অধিষ্ঠিত করতে থাকে। বিংশ শতকের আগ পর্যন্ত পর্তুগীজ উপনিবেশের, যা পরবর্তীতে অ্যাঙ্গোলায় রুপ নেয়, কোনো সীমানা ছিলো না। মূলত কুয়েমাটো, কোয়ানয়ামা ও বুন্দার মতো স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর বিরোধীতাই এর প্রধান কারণ।
দীর্ঘস্থায়ী উপনিবেশ-বিরোধী সংগ্রামের পর ১৯৭৫ সালে অ্যাঙ্গোলা মার্কসবাদী-লেনিনবাদী একদলীয় প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বাধীনতা অর্জন করে। সেই একই বছর ধ্বংসাত্মক গৃহযুদ্ধের শুরু হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও কিউবা সমর্থিত অ্যাঙ্গোলা স্বাধীনতাবাদী গন-আন্দোলন এবং জায়ার সমর্থিত অ্যাঙ্গোলার ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের মধ্যে। ১৯৭৫ সাল থেকেই অ্যাঙ্গোলা স্বাধীনতাবাদী গণ-আন্দোলন দল দ্বারা শাসনক্ষমতায় রয়েছে। ২০০২ সালে যুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকেই অ্যাঙ্গোলা তুলনামূলক স্থিতিশীল একক, রাষ্ট্রপতিশাসিত, সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রাকাশ করেছে।
অ্যাঙ্গোলার বিশাল খনিজ ও পেট্রোলিয়াম মজুদ রয়েছে এবং এর অর্থনীতি বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল, বিশেষ করে গৃহযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে। তবে এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত অসম ও দেশের অধিকাংশ সম্পদ জনসংখ্যার একটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষুদ্র অংশে কেন্দ্রীভূত। এর বৃহত্তম বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বেশিরভাগ অ্যাঙ্গোলানদের জীবনযাত্রার মান এখনো নিম্ন পর্যায়ের; আয়ু পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কম, যেখানে শিশুমৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। ২০১৭ সাল থেকে, জোয়াও লরেঙ্কো -এর সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে তার মূল লক্ষ্য বানিয়েছে, এতটাই যে আগের সরকারের অনেক ব্যক্তিকেই হয় জেলে পাঠানো হয়েছে নয়তো তাঁরা বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। যদিও বিদেশী কূটনীতিকরা এই প্রচেষ্টাকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন, কিছু সংশয়বাদীরা এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করেন।
অ্যাঙ্গোলা জাতিসংঘ, ওপেক, আফ্রিকান ইউনিয়ন, পর্তুগিজ ভাষার দেশগুলির সম্প্রদায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকার উন্নয়ন সম্প্রদায়ের সদস্য। ২০২১ সালের হিসাবে, অ্যাঙ্গোলার আনুমানিক জনসংখ্যা ধরা হয় ৩২.৮৭ মিলিয়ন। অ্যাঙ্গোলা বহুসাংস্কৃতিক এবং বহুজাতিক। অ্যাঙ্গোলান সংস্কৃতি বহু শতাব্দীর পর্তুগিজ শাসনকে প্রতিফলিত করে, যাতে পর্তুগিজ ভাষা এবং ক্যাথলিক চার্চের প্রাধান্যই বেশি এবং বিভিন্ন দেশীয় রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যের সাথে সম্মিলিত।