সৃষ্টিচক্র (হিন্দু দর্শন)
হিন্দুধর্ম মতে ব্ৰহ্মাণ্ডের সৃষ্টি ও ধ্বংস চক্ৰের ধারণা / From Wikipedia, the free encyclopedia
হিন্দু সৃষ্টিচক্র বা হিন্দু সৃষ্টিতত্ত্ব বা মহাজগতত্তত্ত্ব মহাবিশ্বের অবস্থা, এর সময় চক্র, এর গঠন প্রভৃতির সহিত জীবন্ত সত্তার প্রভাবকে বোঝায়।[1][2] তত্ত্বটি ব্ৰহ্মাণ্ডের সৃষ্টি ও ধ্বংস চক্ৰের ধারণা প্ৰদান করে।[3] প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্রে (যেমন: সূর্যসিদ্ধান্ত) সৃষ্টিতত্ত্বের বর্ণনা রয়েছে। এছাড়াও বেদ (নাসদীয় সূক্ত, পুরুষ সূক্ত), উপনিষদ, মহাভারতে সৃষ্টিতত্ত্বের বর্ণনা পাওয়া যায়। পুরাণসমূহে মহাজগৎ সৃষ্টির বর্ণনা একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। হিন্দু সৃষ্টিতত্ত্ব অনুযায়ী প্রায় ৮৬৪ কোটি বছর পরপর ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি ও ধ্বংস হয় এবং এই প্রক্রিয়া চক্রাকারে চলতে থাকে।[4] প্রতিটি মহাবিশ্ব ৪.৩২ বিলিয়ন বছর সময়কাল ধরে স্থায়ী হয়। এই সময়কালকে এক কল্প বা ব্রহ্মার এক দিন বলা হয়। এক কল্পের সমান সময়কাল পরে আসে ব্রহ্মাণ্ডের প্রলয় বা রাত। সৃষ্টি ও ধ্বংসের মধ্যবর্তি সময়কে বলা হয় ব্রাহ্ম অহোরাত্র। এই কল্পসমূহ আবার অসংখ্য চতুর্যুগে বিভক্ত। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী বৰ্তমান কলি যুগ শেষে, প্ৰায় ৪,৩২,০০০ বছর পর ভগবান বিষ্ণুর অন্তিম অবতার কল্কি কলি যুগের সমাপ্ত করে নতুন সত্য যুগ শুরু করবেন।
অনেকে হিন্দু সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে আধুনিক সৃষ্টিতত্ত্বের সাদৃশ্যের কথা স্বীকার করেন।[5] তাদের মতে, বৰ্তমান ব্ৰহ্মাণ্ডের পূৰ্বে অসংখ্য ব্ৰহ্মাণ্ডের সৃষ্টি ও ধ্বংস হয়েছে, এবং ভবিষ্যতে অসংখ্য ব্ৰহ্মাণ্ডের সৃষ্টি ও ধ্বংস হবে।[6][7] ক্রম বিকাশ, মহাকাশ বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান, সৃষ্টি প্রভৃতি ধারণাও হিন্দু সৃষ্টিতত্ত্বে পাওয়া যায়।