আল্পস পর্বতমালা
ইউরোপ মহাদেশের দীর্ঘতম পর্বতমালা / From Wikipedia, the free encyclopedia
আল্পস হলো ইউরোপের সর্বোচ্চ এবং বৃহত্তম পর্বতমালা।[2] এটি ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, স্লোভেনিয়া, লিশটেনস্টাইন এবং মোনাকো এই আটটি দেশ জুড়ে প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার (৭৫০ মাইল) বিস্তৃত।[3]
আল্পস পর্বতমালা | |
---|---|
সর্বোচ্চ বিন্দু | |
শিখর | মাউন্ট ব্লাঙ্ক |
উচ্চতা | ৪,৮০৮.৭৩ মিটার (১৫,৭৭৬.৭ ফুট) [1] |
তালিকাভুক্তি | পর্বতশ্রেণীর তালিকা |
স্থানাঙ্ক | ৪৫°৪৯′৫৮″ উত্তর ০৬°৫১′৫৪″ পূর্ব |
মাপ | |
দৈর্ঘ্য | ১,২০০ কিলোমিটার (৭৫০ মাইল) |
প্রস্থ | ২৫০ কিলোমিটার (১৬০ মাইল) |
আয়তন | ২,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৭৭,০০০ বর্গমাইল) |
নামকরণ | |
স্থানীয় নাম |
|
ভূগোল | |
আল্পসের ত্রাণ। আরও দেখুন আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিত মানচিত্র.
| |
Countries | |
রেঞ্জের স্থানাঙ্ক | ৪৬°৩০′ উত্তর ০৯°১৯′ পূর্ব |
ভূতত্ত্ব | |
পর্বতবিদ্যা | আল্পাইন অরোজেনি |
শিলার বয়স | টারশিয়ারি |
শিলার ধরন |
|
আল্পস পর্বতমালাটি আফ্রিকান এবং ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে কোটি কোটি বছর ধরে গঠিত হয়েছে। এই সংঘর্ষের ফলে সমুদ্রের পললী শিলাগুলি উত্থিত হয়ে মন্ট ব্লাঙ্ক এবং ম্যাটারহর্নের মতো উচ্চ পর্বতশৃঙ্গে পরিণত হয়।
মন্ট ব্লাঙ্ক ফ্রান্স এবং ইতালির সীমান্তে অবস্থিত এবং এর উচ্চতা ৪,৮০৯ মিটার (১৫,৭৭৮ ফুট)। আল্পস পর্বতমালায় ১২৮টি পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা ৪,০০০ মিটারেরও (১৩,০০০ ফুট) বেশি।
আল্পস পর্বতমালা ইউরোপের জলবায়ুকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয় এবং জলবায়ু বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকম হয়। আইবেক্সের মতো বন্যপ্রাণী উচ্চতর পর্বতশৃঙ্গে বাস করে এবং এডেলওয়াইসের মতো উদ্ভিদ নিম্ন ও উচ্চ উভয় অঞ্চলেই পাথুরে এলাকায় জন্মায়।
আল্পস পর্বতমালায় মানুষের বসবাসের প্রমাণ পুরা প্রস্তর যুগ থেকে পাওয়া যায়। ১৯৯১ সালে অস্ট্রিয়া-ইতালি সীমান্তের একটি হিমবাহে ৫,০০০ বছর পুরানো একটি মমিফাইড মানবদেহ আবিষ্কৃত হয়, যার নাম "ওটজি"।[4]
খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে, সেল্টিক লা টেন সংস্কৃতি আল্পস পর্বতমালার বেশিরভাগ অঞ্চলেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। হ্যানিবল তার হাতির দল নিয়ে আল্পস পর্বতমালা অতিক্রম করেন। রোমানদের এই অঞ্চলে বসতি ছিল। ১৮০০ সালে, নেপোলিয়ন ৪০,০০০ সৈন্য নিয়ে পর্বতমালাটির একটি অংশ অতিক্রম করেন।
১৮তম এবং ১৯শ শতাব্দীতে প্রকৃতিবিদ, লেখক এবং শিল্পীরা আল্পস পর্বতমালায় আসেন, বিশেষ করে রোমান্টিকরা। এরপর পর্বতারোহণের সুবর্ণযুগ শুরু হয়, যখন পর্বতারোহীরা আল্পস পর্বতমালার শৃঙ্গগুলোতে আরোহণ করতে শুরু করেন।
আল্পস অঞ্চলটির একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক পরিচয় রয়েছে। আল্পাইন গ্রামগুলোতে কৃষি, পনির তৈরি এবং কাঠের কাজের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি এখনও বিদ্যমান, যদিও পর্যটন শিল্প ২০শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে জনপ্রিয় হতে শুরু করে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই শিল্প ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়।
শীতকালীন অলিম্পিক গেমস আল্পসের একটি ঐতিহ্যবাহী গন্তব্য। সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, অস্ট্রিয়া এবং জার্মানি এই অঞ্চলে পাঁচটি শীতকালীন অলিম্পিক গেমস আয়োজন করেছে। ২০১০ সালের হিসাবে, এই অঞ্চলটি ১.৪ কোটি লোকের বাসস্থান এবং প্রতি বছর এখানে প্রায় ১২কোটি দর্শক ঘুরতে আসে।[5]
আল্পস পর্বতমালা ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পদ। এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন করিডোর।