রোডেশিয়া
From Wikipedia, the free encyclopedia
রোডেশিয়া (/roʊˈdiːʒə/ (শুনুনⓘ) roh-DEE-zhə, /roʊˈdiːʃə/ roh-DEE-shə;[2] শোনা: Rodizha) ছিল ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত স্থায়ী আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের একটি অস্বীকৃত রাষ্ট্র। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭০ সাল থেকে দেশটির নাম ছিল রোডেশিয়া প্রজাতন্ত্র।[3] সেসময় রোডেশিয়ার অন্তর্ভূক্ত অঞ্চল বর্তমান আধুনিক জিম্বাবুয়ের সমতুল্য। রোডেশিয়া ছিল দক্ষিণ রোডেশিয়ার ব্রিটিশ উপনিবেশের প্রকৃত উত্তরসূরি রাষ্ট্র। ১৯২৩ সালে দায়িত্বশীল সরকার অর্জনের পর থেকে এটি স্ব-শাসিত ছিল। স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র রোডেশিয়ার দক্ষিণে দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ-পশ্চিমে বেচুয়ানাল্যান্ড (পরবর্তীতে বতসোয়ানা), উত্তর-পশ্চিমে জাম্বিয়া (পূর্বনাম উত্তর রোডেশিয়া) এবং পূর্বে মোজাম্বিক (১৯৭৫ সাল পর্যন্ত একটি পর্তুগিজ প্রদেশ) অবস্থিত ছিল। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত রোডেশিয়া ছিল আফ্রিকা মহাদেশের এমন দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি, যা ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অপর দেশটি হলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
| |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯৬৫–১৯৭৯ | |||||||||
অবস্থা | অস্বীকৃত রাষ্ট্র | ||||||||
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | সালিশ্বুরি | ||||||||
সরকারি ভাষা | ইংরেজি (কার্যত) | ||||||||
অন্যান্য ভাষা | |||||||||
নৃগোষ্ঠী (১৯৬৯) |
| ||||||||
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | Rhodesian | ||||||||
সরকার |
| ||||||||
রানি[lower-alpha 1] | |||||||||
• ১৯৬৫ – ১৯৭০ | দ্বিতীয় এলিজাবেথ | ||||||||
রাষ্ট্রপতি | |||||||||
• ১৯৭০ – ১৯৭৫ | ক্লিফোর্ড ডুপন্ট | ||||||||
• ১৯৭৫ – ১৯৭৬ | হেনরি এভারার্ড (ভারপ্রাপ্ত) | ||||||||
• ১৯৭৬ – ১৯৭৮ | জন রেথাল | ||||||||
• ১৯৭৮ | হেনরি এভারার্ড (ভারপ্রাপ্ত) | ||||||||
• ১৯৭৮ – ১৯৭৯ | জ্যাক পিথে (ভারপ্রাপ্ত) | ||||||||
প্রধানমন্ত্রী | |||||||||
• ১৯৬৫ – ১৯৭৯ | ইয়ান স্মিথ | ||||||||
আইন-সভা | সংসদ | ||||||||
• উচ্চকক্ষ | সিনেট | ||||||||
• নিম্নকক্ষ | হাউজ অব অ্যাসেম্বলি | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | স্নায়ুযুদ্ধ এবং আফ্রিকার উপনিবেশ বিলোপন | ||||||||
• ঘোষণা | ১১ নভেম্বর ১৯৬৫ | ||||||||
• প্রজাতন্ত্র | ২ মার্চ ১৯৭০ | ||||||||
• [অভ্যন্তরীণ বন্দোবস্ত | ৩ মার্চ ১৯৭৮ | ||||||||
১ জুন ১৯৭৯ | |||||||||
আয়তন | |||||||||
• মোট | ৩,৯০,৫৮০ কিমি২ (১,৫০,৮০০ মা২) | ||||||||
জনসংখ্যা | |||||||||
• ১৯৭৮ আদমশুমারি | ৬৯,৩০,০০০ | ||||||||
মুদ্রা |
| ||||||||
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+2 (CAT) | ||||||||
| |||||||||
বর্তমানে যার অংশ | জিম্বাবুয়ে | ||||||||
|
১৯ শতকের শেষের দিকে ট্রান্সভালের উত্তরের অঞ্চলটি সেসিল রোডসের নেতৃত্বে ব্রিটিশ দক্ষিণ আফ্রিকা কোম্পানির কাছে চার্টার্ড করা হয়েছিল। রোডস এবং তার পাইওনিয়ার কলাম বাহিনী ১৮৯০ সালে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একটি বিশাল অঞ্চল অধিগ্রহণ করে। সেসব অঞ্চলে কোম্পানিটি ১৯২০ এর দশকের শুরু পর্যন্ত শাসন করে। ১৯২৩ সালে কোম্পানির সনদ প্রত্যাহার করা হয়। সেসময় দক্ষিণ রোডেশিয়া একটি আইনসভা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে স্ব-শাসিত সরকার অর্জন করে। দক্ষিণ রোডেশিয়া ১৯৫৩ ও ১৯৬৩ সালের মধ্যবর্তী সময়ে উত্তর রোডেশিয়া এবং নিয়াসাল্যান্ডের সাথে যুক্ত হয়ে ফেডারেশন অফ রোডেশিয়া এবং নিয়াসাল্যান্ডের অংশ ছিল।
১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে আফ্রিকার দ্রুত উপনিবেশকরণ দক্ষিণ রোডেশিয়ার শ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে শঙ্কিত করেছিল। কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসনে স্থানান্তর বিলম্বিত করার প্রয়াসে প্রধানত শেতাঙ্গ দক্ষিণ রোডেশীয় সরকার ১৯৬৫ সালের ১১ নভেম্বরে যুক্তরাজ্য থেকে নিজস্ব একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা (ইউডিআই) জারি করে। নতুন দেশটি নিজেদের কেবল রোডেশিয়া হিসাবে ঘোষণা দিয়ে প্রাথমিকভাবে কমনওয়েলথ অফ নেশনসের অন্তর্গত একটি স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি চেয়েছিল। কিন্তু ১৯৭০ সালে দেশটিকে একটি প্রজাতন্ত্র হিসাবে পুনর্গঠিত করা হয়।
স্বাধীনতার ঘোষণার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি রেজুলেশন পাস করে, যেখানে সকল রাষ্ট্রকে রোডেশিয়াকে স্বীকৃতি না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। দুটি আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী দল, জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান পিপলস ইউনিয়ন (জেডএপিইউ) ও জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন (জেডএএনইউ) ইউডিআই সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে রোডেশীয় বুশ যুদ্ধের সূত্রপাত করে। ক্রমবর্ধমান যুদ্ধের ক্লান্তি, কূটনৈতিক চাপ এবং জাতিসংঘ কর্তৃক আরোপিত একটি ব্যাপক বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ১৯৭৮ সালে রোডেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইয়ান স্মিথকে সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসনে মেনে নিতে বাধ্য করে। যদিও নির্বাচন পরবর্তী একটি বহুজাতিক অস্থায়ী সরকার এবং স্মিথের ও তার উত্তরসূরী মধ্যপন্থী আবেল মুজোরেওয়া আন্তর্জাতিক সমালোচকদের সন্তুষ্ট করতে বা যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মুজোরেওয়া জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান পিপলস ইউনিয়ন ও জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়নের সাথে একটি চুক্তি করতে সক্ষম হন। এর ফলে রোডেশিয়া ব্রিটিশ তত্ত্বাবধানে নতুন নির্বাচনের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে ঔপনিবেশিক অবস্থানে ফিরে যেতে পারে। জেডএএনইউ ১৯৮০ সালে একটি নির্বাচনী বিজয় অর্জন করে এবং ১৯৮০ সালের এপ্রিল মাসে দেশটি জিম্বাবুয়ে হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বাধীনতা অর্জন করে।
রোডেশিয়ার বৃহত্তম শহরগুলো ছিল সলসবারি (এর রাজধানী শহর, যা এখন হারারে নামে পরিচিত) এবং বুলাওয়েও। ১৯৭০ সালের আগে প্রধানত শ্বেতাঙ্গদের নিয়ে এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা ছিল, যেখানে অল্প সংখ্যক আসন কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিনিধিদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। ১৯৭০ সালে দেশটিকে একটি প্রজাতন্ত্রের ঘোষণার পর আইনসভাটিকে একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদে পরিণত করা হয়। একটি হাউস অফ অ্যাসেম্বলি এবং অন্যটি ছিল সেনেট। ১৯৮০ সালের পর জিম্বাবুয়েতে দ্বিকক্ষ ব্যবস্থা বহাল ছিল। এর জাতিগত ভোটাধিকার ছাড়াও, রোডেশিয়া যুক্তরাজ্য থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত একটি মোটামুটি প্রচলিত ওয়েস্টমিনস্টার ব্যবস্থা কার্যকর করেছিল। সেখানে রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে কাজ করতেন এবং একজন প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসাবে মন্ত্রিপরিষদের নেতৃত্ব দিতেন।