মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৩৭০
From Wikipedia, the free encyclopedia
মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৩৭০ (এমএইচ৩৭০/এমএএস৭০) একটি নিয়মিত যাত্রীবাহী বিমান ফ্লাইট যা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিং যাওয়ার পথে আকাশ থেকে হারিয়ে যায়। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ৮ই মার্চ তারিখে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স পরিচালিত বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর বিমানটি কুয়ালালামপুর থেকে উড্ডয়নের ঘণ্টাখানেক বাদে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। বিমানটিতে ১৫টি দেশের ১২ জন কর্মী ও ২২৭ জন যাত্রীসহ মোট ২৩৯ জন যাত্রী ছিলেন যাদের অধিকাংশই চীনা। ২৪ মার্চ তারিখ পর্যন্ত এর হদিশ করা যায় নি বা কোথাও কোনো ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয় নি। তবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে অনুসন্ধান তৎপরতা অব্যাহত আছে। ১৬ মার্চে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন যে সম্ভবত বিমানটি ছিনতাই হয়েছিল।[1] ২৪ মার্চ তারিখে মালয়েশিয় সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় যে, (সম্ভবত) ভারত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে বিমানটি আকাশ থেকে পড়ে যায় এবং এর যাত্রীরা কেউ বেঁচে নেই।[2]
নিরুদ্দেশ বিমান | |
---|---|
তারিখ | ৮ মার্চ ২০১৪ (2014-03-08), ১০ বছর, ৭৮ দিন পূর্বে |
সারমর্ম | নিরূদ্দেশ |
স্থান | সর্বশেষ নিশ্চিত অবস্থান ৬°৫৫′১৫″ উত্তর ১০৩°৩৪′৪৩″ পূর্ব |
উড়োজাহাজ | |
বিমানের ধরন | বোয়িং ৭৭৭ |
পরিচালনাকারী | মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স |
নিবন্ধন | ৯এম-এমআরও |
ফ্লাইট শুরু | কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর |
গন্তব্য | বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর |
যাত্রী | ২২৭ |
কর্মী | ১২ |
বিমানটি উড্ডয়নের এক ঘণ্টার কিছু কম সময় পরে কুয়ালামপুর বিমান বন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে যোগাযোগ করেছিল। উড্ডয়নের এক ঘণ্টা পরই ভিয়েতনামের দক্ষিণে কামাউ-এর আকাশসীমায় প্রবেশের পর বিমানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
শুরুতে ১২টিরও বেশি দেশ সম্মিলিতভাবে মালাক্কা প্রণালী ও দক্ষিণ চীন সাগরে মোট ২৭,০০০ বর্গ ন্যাটিকেল মাইল (৯৩,০০০ বর্গকিলোমিটার; ৩৬,০০০ বর্গমাইল) এলাকাজুড়ে নিখোঁজ বিমানটির খোঁজে অনুসন্ধান চালিয়েছে।[3][4] প্রাথমিকভাবে ভিয়েতনামকে প্রাধান্য দিয়ে অনুসন্ধান পরিচালনা করা হলেও ১১ই মার্চ ভিয়েতনামে বিমানটির খোঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে ও অনুসন্ধানকারীরা বিমানটি ভূমিতে অবতরণ করেছে কিনা তা অনুসন্ধান শুরু করে। ১২ই মার্চ কর্তৃপক্ষ মালাক্কা প্রনালীর উত্তর-পশ্চিমের আন্দামান সাগরে অনুসন্ধান শুরু করে।[5][6][7][8]
১৩ই মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তার বলেন যে তারা অনুসন্ধান কাজ কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ফ্লাইট পথ ভারত মহাসাগরেও বিস্তৃত করতে আশাবাদী। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা বিশ্বাস করেন বিমানটি মালয় উপদ্বীপ ঘুরে পশ্চিম দিকে যেতে পারে[9][10] এবং তারা আরো বলেন, বিমানটি রাডার থেকে প্রথম নিখোঁজ হওয়ার পর আরো ৪/৫ ঘণ্টা আকাশে উড়ে থাকতে পারে।[11][12]
১৫ মার্চ, মালয়েশিয়ান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক একটি সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দেন এবং তিনি স্যাটেলাইট এবং রাডার তথ্যের উপর ভিত্তি করে বলেন, বিমানটি কেউ ভেবেচিন্তে রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্লেনটি দিক পরিবর্তন করে মালয়েশিয়ার উপর দিয়েই ভারতের দিকে অগ্রসরের চেষ্টা করে। প্লেনের ভেতরে অবস্থানরত যেকেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পর সম্ভবত আরো সাত ঘণ্টা আকাশে উড়েছিল। দক্ষিণ চীন সাগর ও থাইল্যান্ড উপসাগরে অনুসন্ধান তৎপরতা বন্ধ করা হয়েছিল।[13][14] ১৬ মার্চ তারিখে অনুসন্ধানে অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা বাংলাদেশ সহ ২৮শে উন্নীত হয়। শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয় সরকার ঘোষণা করে যে উড্ডয়নের এক ঘণ্টা পর আকাশ থেকে হারিয়ে যাওয়া বিমানটি সমুদ্রে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়। বহু তল্লাশী করেও সমুদ্রের তলদেশে নিখোঁজ বিমানের কোন ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করা যায় নি।
বিমানটি নিখোজেঁর দুই মাসের অল্প কিছু সময় পর যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাংবাদিক নাইজেল ক্যাথর্ন তার ফ্লাইট এমএইচ৩৭০: দ্য মিস্ট্রি নামক গ্রন্থে দাবী করেন যে যুক্তরাষ্ট্র-থাইল্যান্ড যৌথ সামরিক মহড়া কালে ওই বিমানটি গুলিবিদ্ধ হয়।[15] প্রায় একই সময়ে মালয়েশিয় নেতা মাহাথির বিন মোহাম্মদ সন্দেহ প্রকাশ করেন যে বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইয়ের যোগসূত্র থাকতে পারে।[16]