পরমার রাজবংশ
From Wikipedia, the free encyclopedia
পরমার রাজবংশ (এছাড়াও, প্রমার, পনওয়ার, পওয়ার, পানওয়ার প্রভৃতি নামে পরিচিত)[4] খ্রিস্টীয় নবম থেকে চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে পশ্চিম-মধ্য ভারতের মালব ও তৎসংলগ্ন এলাকাগুলো শাসন করত।
মালবের পরমার রাজবংশ | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
খ্রিস্টীয় নবম অথবা দশম শতাব্দী–১৩০৫ খ্রিস্টাব্দ | |||||||||
১২০০ খ্রিস্টাব্দের এশিয়ার মানচিত্র, মধ্যভারতে পরমার রাজ্যের অবস্থান প্রদর্শিত হয়েছে।[2] | |||||||||
রাজধানী | |||||||||
প্রচলিত ভাষা | সংস্কৃত | ||||||||
ধর্ম | শৈবধর্ম[3] | ||||||||
সরকার | রাজতন্ত্র | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | ধ্রুপদি ভারত | ||||||||
• প্রতিষ্ঠা | খ্রিস্টীয় নবম অথবা দশম শতাব্দী | ||||||||
• বিলুপ্ত | ১৩০৫ খ্রিস্টাব্দ | ||||||||
| |||||||||
বর্তমানে যার অংশ | ভারত |
এই রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয় খ্রিস্টীয় নবম অথবা দশম শতাব্দীতে। আদি পরমার শাসকেরা সম্ভবত মান্যখেতের রাষ্ট্রকূটদের সামন্ত শাসক হিসেবে রাজত্ব করতেন। গুজরাত থেকে প্রাচীনতম যে পরমার শিলালিপিটি পাওয়া গিয়েছে, সেটি দশম শতাব্দীর শাসক সিয়ক কর্তৃক উৎকীর্ণ হয়েছিল। ৯৭২ খ্রিস্টাব্দে সিয়ক রাষ্ট্রকূট রাজধানী মান্যখেত জয় ও লুণ্ঠন করে পরমারদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর উত্তরসূরি মুঞ্জের শাসনকালে অধুনা মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের অন্তর্গত মালব অঞ্চলটি পরমার রাজ্যের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে পরিণত হয়। পরমারদের রাজধানী ছিল ধার শহরটি। মুঞ্জের ভ্রাতুষ্পুত্র ভোজের অধীনে পরমার রাজবংশ সমৃদ্ধির শিখরে আরোহণ করে। ভোজের রাজ্য উত্তরে চিতোর থেকে দক্ষিণে কোঙ্কন এবং পশ্চিমে সবরমতী নদী থেকে পূর্বে বিদিশা পর্যন্ত প্রসারিত ছিল।
গুজরাতের চালুক্য, কল্যাণীর চালুক্য, ত্রিপুরীর কলচুরি, জেকাকাভুক্তির চন্দেল ও অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে পরমার ক্ষমতার একাধিকবার উত্থান ও পতন ঘটেছিল। ধার শহরটি কয়েকবার শত্রুদের হাতে লুণ্ঠিত হওয়ার পর পরবর্তীকালের পরমার শাসকেরা তাঁদের রাজধানী মণ্ডপ-দুর্গে (অধুনা মান্ডু) স্থানান্তরিত করেন। মহালকদেব ছিলেন শেষ জ্ঞাত পরমার রাজা। ১৩০৫ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির আলাউদ্দিন খিলজির সেনাবাহিনী কর্তৃক তিনি পরাজিত ও নিহত হন। যদিও শিলালিপির প্রমাণ থেকে মনে করা হয় মহালকদেবের মৃত্যুর পরেও পরমাররা কিছুকাল মালব শাসন করেছিল।
পরমার রাজবংশের অধীনে মালব একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। পরমার শাসকেরা খ্যাত ছিলেন সংস্কৃত কবি ও পণ্ডিতদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য। রাজা ভোজ নিজেও ছিলেন এক বিশিষ্ট পণ্ডিত। অধিকাংশ পরমার রাজা ছিলেন শৈব এবং একাধিক শিবমন্দির তাঁরা রাজ্যে স্থাপন করেছিলেন। যদিও তাঁরা জৈন পণ্ডিতদেরও পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।