আদি পুস্তক
পুরাতন নিয়মের প্রথম পুস্তক / From Wikipedia, the free encyclopedia
আদি পুস্তক (ল্যাটিন ভাষায়ঃ Vulgate, অনুকরণ বা লিপান্তরিত করা হয়েছে গ্রিক শব্দঃ γένεσις হতে, অর্থঃ "আদি"; হিব্রু ভাষায়ঃ בְּרֵאשִׁית, Bərēšīṯ, "সূচনায়") হিব্রু বাইবেল (তানাখ) ও খ্রিস্টীয় পুরাতন নিয়মের প্রথম পুস্তক।[1] একে দুইটি অংশে ভাগ করা যায়, প্রারম্ভিক ইতিহাস(অধ্যায় ১-১১) ও বংশানুক্রমিক ইতিহাস (অধ্যায় ১২-৫০)।[2] আদি ইতিহাসে স্রষ্টার সাথে দেবতা এবং মানবজাতির সম্পর্কের প্রকৃতি সম্বন্ধে লেখক(দের) ধারণা সজ্জিত হয়েছেঃ প্রভু জগত সৃষ্টি করেছেন যা মানবজাতির জন্য অনুকূল ও মানানসই, কিন্তু যখন মানুষ পাপের দ্বারা একে দূষিত করে ফেলে ,তখন প্রভু তার সৃষ্টিকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন, কেবলমাত্র সত্যপন্থী নূহকে রক্ষা করেন, যাতে করে প্রভু ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা যায়।[3] বংশানুক্রমিক ইতিহাসে (অধ্যায় ১২-৫০) প্রাগৈতিহাসিক ইসরাইল ও প্রভুর বাছাইকৃত লোকদের কথা বলা হয়েছে।[4] প্রভুর নির্দেশে নূহের বংশধর ইব্রাহিম নিজ আবাস থেকে কেনানে যাত্রা করেন। এটি প্রভুর পক্ষ থেকে তাকে দেওয়া হয়, যেখানে তিনি একজন বিদেশি হিসেবে বসবাস শুরু করেন, তদ্রূপ তার সন্তান ইসহাক ও পৌত্র ইয়াকুব ও। ইয়াকুবের নাম পরিবর্তিত হয়ে ইসরাইল হয় এবং তার পুত্র ইউসুফের মাধ্যমে ইসরাইলের পুত্রগণ মিশরে প্রবেশ করেন, যারা স্বপরিবারে মোট সত্তর জন ছিলেন। প্রভু তাদেরকে মহান এক ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দেন। ইসরাইল মিশরে পৌঁছানোর মাধ্যমে আদি পুস্তকের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং মূসার আগমন ও যাত্রাপুস্তকের প্রস্তুতি শুরু হয়। এই আখ্যানে প্রভূর সাথে কতগুলো অঙ্গীকার পরম্পরার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যা ক্রমান্বয়ে সমগ্র মানবজাতি (নূহের সাথে কৃত অঙ্গীকারনামা) থেকে সংকুচিত হয়ে একটিমাত্র সম্প্রদায়ে (ইব্রাহিম এবং ইসহাক,ইয়াকুবের মাধ্যমে তার বংশধরদের) সাথে বিশেষ সম্পর্কে পরিণত হয়।[5]
ইহুদি ধর্মে, আদিপুস্তকের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব অঙ্গীকারনামাগুলোকে কেন্দ্র করে, যা প্রভুকে তার বাছাইকৃত এবং প্রতিশ্রুত ভূমির লোকদের সাথে সম্পর্কযুক্ত করে। খ্রিস্ট ধর্ম আদিপুস্তককে ব্যাখ্যা করেছে তাদের একান্ত খ্রিস্টীয় মৌলিক বিশ্বাসগুলোর পূর্বভিত্তি হিসেবে, যেগুলোর মধ্যে প্রাথমিকভাবে রয়েছে পরিত্রাণের (সকল খ্রিস্টানের আশা ও প্রতিশ্রুতি) প্রয়োজনীয়তা এবং ক্রুশের উপর খ্রিস্ট কর্তৃক সংঘটিত পুনরুদ্ধার কর্ম, যাতে করে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে অঙ্গীকারনামার প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস করা হয়, মূসা আদি পুস্তকের পাশাপাশি যাত্রা পুস্তক, লেবীয় পুস্তক, গণনা পুস্তক এবং দ্বিতীয় বিবরণের অধিকাংশ অংশের লেখক। তবে,আধুনিক পণ্ডিতগণ দিন দিন এগুলোকে খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৫ম শতকের কাজ হিসেবে দেখছেন।[6][7]