অক্টোপাস
মলাস্কার বর্গ / From Wikipedia, the free encyclopedia
অক্টোপাস আটটি বাহু বিশিষ্ট সামুদ্রিক প্রাণী। দেখতে শামুকের মত হলেও (শক্ত খোলস নেই) এরা শামুক-ঝিনুকের জাতভাই অর্থাৎ মোলাস্কা ফাইলামের অন্তর্ভুক্ত। এদের মাথার ঠিক পিছনেই আটটি শুঁড়-পা আছে তাই এরা সেফালোপোডা বা "মস্তক-পদ" শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত (স্কুইড-ও একই শ্রেণীর)। এরা নিশাচর, সাধারণতঃ ধীর গতিসম্পন্ন।প্রায় ১৫০ প্রজাতির ছোটবড় বিভিন্ন আকারের অক্টোপাস রয়েছে।
অক্টোপাস সময়গত পরিসীমা: Early Pennsylvanian – Recent[1] | |
---|---|
The common octopus, Octopus vulgaris. | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
Suborders | |
| |
প্রতিশব্দ | |
|
সমুদ্রের বিভিন্ন অঞ্চলে অক্টোপাসেরা বসবাস করে, যার মধ্যে রয়েছে কোরাল শৈলশিরা, উন্মুক্ত অগভীর জল এবং সমুদ্রতল ইত্যাদি। কিছু কিছু আবার জোঁয়ার-ভাটা হয় এমন স্থানে আবার কিছু আছে গভীর সমুদ্রে বসবাস করে। বেশিরভাগ প্রজাতিই দ্রুত বর্ধমান, তাড়াতাড়ি পূর্ণ বয়স্ক হয়। বংশ বৃদ্ধির সময় পুরুষ অক্টোপাস বিশেষ শুঁড় দিয়ে শুক্রানু, স্ত্রী অক্টোপাসে স্থানান্তর করে,এরপর সে ধীরে ধীরে মারা যায়। স্ত্রী অক্টোপাস নিষিক্ত ডিমগুলো কোন গুহা জাতীয় স্থানে রাখে এবং ফুটে বাচ্চা বের হওয়া পূর্ব পর্যন্ত যত্ন করে, তারপর সেও মারা যায়।
শিকারী প্রাণীদের হাত থেকে বাঁচতে তারা কালি ছুঁড়ে মারে, ছদ্মবেশ ধারন করে বা রং পাল্টায় এবং ভীতি প্রদর্শন করে। এছাড়াও তারা আত্মরক্ষার জন্য দ্রুত পালানোর ক্ষমতা ও লুকিয়ে পড়ার ক্ষমতা ব্যবহার করে। সব অক্টোপাসই বিষাক্ত, কিন্তু শুধুমাত্র নীল গোলক বিশিষ্ট অক্টোপাসই মানুষের জন্য মারাত্মক। অক্টোপাসের ৩টি হৃৎপিণ্ড আছে।[3] এদের মধ্যে ২টি মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ করে।আর বাকি একটি অক্টোপাসের সারা দেহে রক্ত সরবরাহ করে।হিমোসায়ানিন নামক রাসায়নিকের জন্য এদের রক্তের রং নীল। অক্টোপাস প্রচালন কাজ চালায় জেট বিমানের মতো করে।তারা প্রথমে তাদের শরীরের পেশীতে প্রচুর পানি টেনে নেয়,এরপর সাইফন নামে একটি নল বের করে সেটা দিয়ে পানি গুলো সব বের করে দেয়। এই প্রক্রিয়ায় তারা পানি বের করার দিকের উল্টো দিকে গতিপ্রাপ্ত হয়।যত বেশি পানি তারা নিবে তত বেশি তারা গতি প্রাপ্ত হবে।এই প্রক্রিয়া বার বার করে তারা চলতে থাকে।
পৌরানিক কাহিনীতে অক্টোপাসকে সমুদ্রের দানবরূপে আখ্যায়িত করতে দেখা গেছে, যেমন নরওয়ের ক্রাকেন এবং আইনুদের আকোরোকামুই হিসেবে এবং সম্ভবত প্রাচীন গ্রীসে গর্গন রূপে। ভিক্টর হুগোর একটি বইয়ে, যার নাম টয়লার্স অব দ্যা সি, অক্টোপাসের সাথে একটি যুদ্ধের বয়ান আছে। আয়ান ফ্লেমিং অনুপ্রাণিত হয়ে বানান অক্টোপুসি। অক্টোপাসেরা জাপানের উত্তেজক চিত্রতেও স্থান করে নিয়েছে যার নাম সুঙ্গা। এশিয়ার সাগর ও ভূ-মধ্য সাগরের বিভিন্ন দেশে এদের খাদ্য হিসেবে খাওয়া হয়।